মাষকলাই ডালের উপকারিতা ও অপকারিতা - মাষকলাই চাষের সময় ও পোকা দমন
মাষকলাই ডালের উপকারিতা ও অপকারিতা - মাষকলাই চাষের সময় ও পোকা দমন এ আর্টিকেলে আপনারা জানতে পারবেন মাষকলাই ডালের উপকারিতা ও অপকারিতা, সেই সাথে আরো জানতে পারবেন মাষকলাই চাষের সময় ও কিভাবে পোকা দমন করা যায়।

সূচিপত্রঃ মাষকলাই ডালের উপকারিতা ও অপকারিতা - মাষকলাই চাষের সময় ও পোকা দমন
- মাষকলাই ডালের উপকারিতা ও অপকারিতা
- মাষকলাই গাছ দেখতে কেমন
- মাষকলাই ডালে থাকা পুষ্টি উপাদান
- কোন সময়ে মাষকলাই ডাল পাওয়া যায়
- মাষকলাই ডালের ১০ টি উপকারিতা
- মাষকলাই ডালের ৫ টি অপকারিতা
- মাষকলাই ডাল খাওয়ার সঠিক পদ্ধতি
- মাষকলাই চাষের উপযুক্ত সময়
- মাষকলাই চাষে জমি তৈরির পদ্ধতি
- মাষকলাই চাষে সেচ ও সার
- মাষকলাইয়ের পোকা দমন
- মাষকলাই ডাল সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন ও উত্তর
- মাষকলাইয়ের যত্ন ও টিপস
- শেষ মন্তব্য
মাষকলাই ডালের উপকারিতা ও অপকারিতা
মাষকলাই ডালের উপকারিতা ও অপকারিতা চলুন এ সম্পর্কে এখন বিস্তারিত জেনে নেই। মাষকলাই ডালের যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমনি এর বেশ কিছু অপকারিতা রয়েছে। এ সকল কিছু জানা থাকলে আমাদের খাবার বিষয়ে স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ভালো হয়। নিম্নে মাষকলাই ডালের উপকারিতা ও অপকারিতা উল্লেখ করা হলো-
মাষকলাই ডালের উপকারিতা
উচ্চ প্রোটিনের উৎস
মাষকলাই ডালে প্রচুর প্রোটিন থাকে যা মাংসপেশি গঠনে সহায়তা করে। শরীরের কোষ পুনর্গঠন বৃদ্ধি হাড় শক্তিশালী করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
ফাইবারের ভালো উৎস
মাষকলাই ডালে থাকা ফাইবার হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। সেই সাথে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে এটি সাহায্য করে থাকে।
হৃদরোগের জন্য ভালো
এতে পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম থাকে বলে, এটি হৃদপিন্ডের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। সেই সাথে এটি উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক
মাষকলাই ডালে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম হওয়ায় এটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ সহায়ক। এর কারণে এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী। এই ডালে ফাইবার থাকে বলে রক্ত চিনির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। তাই এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী।
রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধ
মাষকলাই ডালে ভালো পরিমাণে আয়রন থাকে। ফলে এটি রক্তের হিমোগ্লোবিন বাড়াতে এবং সেই সাথে রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধে সহায়ক ভূমিকা রাখে।
মাষকলাই ডালের অপকারিতা
অম্বলত্যের কারণ
মাষকলাই ডালে শর্করা থাকে যা মানুষের পেটে গ্যাস সৃষ্টি করতে পারে বা পেট ফোলা ভাব বা অম্বলত্য হতে পারে।
হজমের সমস্যা
যাদের ফাইবার খেলে সমস্যা হয় তাদের হজমের সমস্যা হবে। কেননা মাষকলাই ডালে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে।
র্যাশ ও চুলকানি
অনেক মানুষ অ্যালার্জিতে ভোগেন, যারা অ্যালার্জিতে ভোগেন তাদের জন্য মাষকলাই ডাল না খাওয়াই ভালো। কেনোনা মাষকলাই ডাল খেলে অ্যালার্জি জনিত র্যাশ বা চুলকানি এগুলো হতে পারে।
কিডনির সমস্যা
মাষকলাই ডাল অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে যদি কোন ব্যক্তির কিডনির সমস্যা থাকে তাহলে তাদের জন্য অনেক খারাপ।
ইউরিক এসিড বৃদ্ধি
মাষকলাই ডাল খেলে ইউরিক এসিড বৃদ্ধি পায়, ফলে এটি অতিরিক্ত পরিমাণ খাওয়া এড়িয়ে চলা উচিত।
মাষকলাই গাছ দেখতে কেমন
মাষকলাই গাছ দেখতে কেমন চলুন এবার এ বিষয়টি বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক। মাষকলাই গাছ দেখতে সবুজাকৃতির এবং এটা চিকন কান্ড বিশিষ্ট সেই সাথে পাতা খসখসে মধ্যম আকৃতির হয়ে থাকে। আপনাদের চেনার সুবিধার্থে মাষকলাই গাছের কয়েকটি ছবি নিম্নে দেওয়া হলো-
মাষকলাই ডালের আরেকটি নাম রয়েছে কাতিকলাই। বিভিন্ন অঞ্চলে এই ডালটি কাতিকালাই নামে পরিচিত।
মাষকলাই ডালে থাকা পুষ্টি উপাদান
মাষকলাই ডালে থাকা পুষ্টি উপাদান জানলে আপনি অবাক হবেন। এতে থাকা নানা পুষ্টি উপাদান শরীরের জন্য অনেক উপকারিতা বয়ে নিয়ে আসে। তবে অবশ্যই সঠিক উপায়ে এটি যদি গ্রহণ করা হয় তাহলে এর উপকারিতা গুলো লাভ করা যায়। নিম্নে মাষকলাই ডালে থাকা পুষ্টি উপাদান গুলো তুলে ধরা হলো-
মাষকলাই ডালে প্রচুর পরিমাণে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য যেমনঃ- প্রোটিন, শর্করা, আমিষ, আয়রন, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, সোডিয়াম, লৌহ, স্নেহ, ফাইবার। এছাড়াও রয়েছে ভিটামিন উপাদান যেমনঃ- ভিটামিন 'বি'।
প্রতি ১০০ গ্রাম মাষকলাই ডালে রয়েছে ক্যালোরি ৩৪১, এর মধ্যে পটাশিয়াম-৯৮৩ মি.গ্রাম, ক্যালসিয়াম-১৩৮ মি.গ্রাম, সোডিয়াম-৩৮ মি.গ্রাম, প্রোটিন-২৫ গ্রাম। বিশেষজ্ঞরা বলেন মাষকলাই ডালে শতকরা ২০ থেকে ২৩ ভাগ আমিষ থাকে।
আরও পড়ুনঃ শসার উপকারিতা ও অপকারিতা:জানুন এ টু জেড
কোন সময়ে মাষকলাই ডাল পাওয়া যায়
কোন সময়ে মাষকলাই ডাল পাওয়া যায় চলুন এবার এ বিষয়টি জেনে নেওয়া যাক। মাষকলাই ডাল সাধারণত দুইটি সময়ে চাষাবাদ করা হয়ে থাকে, এবং বছরে প্রায় সারা বছরই এই ডাল পাওয়া যায় ও মাষকলাই বীজ পাওয়া যায়। নিম্নে কোন সময় মাষকলাই ডাল পাওয়া যায় সে সম্পর্কে তুলে ধরা হলো-
মাষকলাই ডালটি প্রায় সারা বছরই পাওয়া যায়। তবে শীতকালে এই ডালের চাহিদা গ্রীষ্মকালীন সময়ের চাইতে অনেক বেশি। বছরে প্রায় শীত থেকে গীষ্ম এই ছয় মাস পর্যন্ত ডালটির চাহিদা বেশ লক্ষ্য করা যায়। তবে গ্রীষ্মকালীন সময়ে এ ডালটির চাহিদা তুলনামূলক কম। বাজারে যে কোন মুদির দোকানে ডালটি পাওয়া যায়।
মাষকলাই ডাল বাংলাদেশে ২ সময়ে চাষ করতে দেখা যায়। একটি খরিপ-১ ও আরেকটি রবি মৌসুম অর্থাৎ গ্রীষ্মকালীন সময়ে এটা হয় আবার শীতকালেও এটা হায়। বর্ষাকালে হয়না, কারণ অতিরিক্ত পানি হলে এ গাছ মরে যায়।
মাষকলাই ডালের ১০ টি উপকারিতা
মাষকলাই ডালের ১০ টি উপকারিতা এখন আমরা এ বিষয়টি জানবো মাষকলাই ডালের উপকারিতা ও অপকারিতা এই প্রবন্ধে বিস্তারিত। নিম্নে মাষকলাইডালের ১০ টি উপকারিতা উল্লেখ করা হলো-
মাষকলাই ডালের ১০ টি উপকারিতা
- কোলেস্টোরল নিয়ন্ত্রণে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
- রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধ করতে সহায়ক।
- এটি ডায়বেটিস রোগীদের জন্য অনেক উপকারি।
- এটি ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে।
- এটি ত্বকের বলিরেখা কমাতে সাহায্য করে।
- এই ডাল হৃদপিন্ডের স্ব্যাস্থের উন্নতিতে সহায়তা করে থাকে।
- এটি রক্তের হিমোগ্লোবিন বাড়ায়।
- এই ডাল আমাদের পেশী গঠনে সহায়ক।
- এই ডাল আমাদের শরীরের শক্তি যোগায়।
- এটি উচ্চ রক্তচাপ কমায়।
উপরে বর্ণিত, এই ডাল আমাদের শরীরে উপরিউক্ত উপকারগুলো করে থাকে।
মাষকলাই ডালের ৫ টি অপকারিতা
মাষকলাই ডালের ৫ টি অপকারিতা চলুন এখন আমরা এ বিষয় সম্পর্কে জেনে নেই। মাষকলাই ডালের উপকারিতা ও অপকারিতা - মাসকলাই চাষের সময় ও পোকা দমন এই আর্টিকেলে নিম্নে মাষকলাই ডালের ৫ টি অপকারিতা উল্লেখ করা হলো-
মাষকলাই ডালের ৫ টি অপকারিতা
- এই ডাল কিছু ব্যক্তির ক্ষেত্রে গ্যাসের সমস্যা হতে পারে।
- এই ডাল অনেকের মাঝে হজম সমস্যা দেখা দেয়।
- এটি খেলে কারও অ্যালার্জি হতে পারে।
- যারা গাউড বা আরথ্রাইটিস সমস্যায় ভুগছেন তাদের জন্য এ ডাল অনেক ঝুকিপূর্ণ।
- এটি অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে কিডনির সমস্যা হতে পারে।
উপরে বর্ণিত এই ডাল অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে আমাদের শরীরে উপরিউক্ত সমস্যা গুলো দেখা দিতে পারে।
মাষকলাই ডাল খাওয়ার সঠিক পদ্ধতি
মাষকলাই ডাল খাওয়ার সঠিক পদ্ধতি এখন আমরা জানবো মাষকলাই ডাল কিভাবে খেলে আমাদের শরীরের জন্য বা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হবে এবং ক্ষতির দিক থেকে আমরা রক্ষা পাবো। নিম্নে মাষকলাই ডাল খাওয়ার সঠিক পদ্ধতি তুলে ধরা হলো-
- মাষকলাই ডাল খাওয়ার আগে কমপক্ষে ৩০ মিনিট থেকে ১ ঘন্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখা ভালো, এতে ডাল দ্রুত সিদ্ধ হবে এবং পুষ্টি উপাদান গুলো সহজে শোষিত হবে।
- ডাল রান্না করার সময় পানির ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে। বেশি পানি হলে ডাল পাতলা হয়ে যেতে পারে আর কম পানি হলে ডাল সিদ্ধ সময় নিতে পারে। সাধারণত এক কাপ ডালের জন্য তিন কাপ পানি ব্যবহার করা উচিত।
- ডাল ভালোভাবে সেদ্ধ হতে কমপক্ষে ১৫ থেকে ২০ মিনিট সময় নিতে পারে। যদি প্রেসার কুকার ব্যবহার করেন তবে দুই থেকে তিন সিটি ব্যবহারের ভিতরে হয়ে যাবে।
- এই ডালের সাথে পেঁয়াজ, রসুন, আদা, মসলা বিভিন্ন ধরনের সাথে তেল বা ঘি যোগ করলে স্বাস্থ্যকর হয় এবং এটা খেতে ভালো লাগে।
- রান্না শেষে কাঁচা মরিচ, ধনেপাতা এবং গরম মসলা দিয়ে ডালের স্বাদ আরো ভালো করা যায়।
উপরে বর্ণিত এই পদ্ধতিতে খাওয়া আপনার স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ভালো হবে বলে আশা করা যায়।
মাষকলাই চাষের উপযুক্ত সময়
মাষকলাই চাষের জন্য সঠিক সময় বেছে নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ সাধারণত খরিদ এবং রবি এই সময় মাষকলাই চাষ করা যায়।
যে সময় চাষ করা যায়
- খরিপ মৌসুম
- রবি মৌসুম
- খরিপ মৌসুম- জুন ও জুলাই মাসে খরিপ মৌসুমে মাসকলাই চাষ শুরু হয়। এ সময় পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত থাকে বলে চাষের জন্য ভালো সময়।
- রবি মৌসুমী- অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে রবি মৌসুমে মাসকলাই চাষ করা হয়। এ মৌসুমী বৃষ্টিপাত কম থাকে, তবে সেচের সুবিধা থাকলে চাষে সফল হওয়া যায়।
মাষকলাই চাষে জমি তৈরির পদ্ধতি
মাষকলাই চাষে জমি তৈরির পদ্ধতি চলুন এবার জেনে নেই মাষকলাই চাষের সময় ও পোকা দমন সম্পর্কে আলোচনায়, মাষকলাই চাষে জমি তৈরির পদ্ধতি। নিম্নে এ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-
- মাষকলাই চাষের জন্য বেলে-দোআঁশ মাটি সবচেয়ে উপযোগী। মাটিতে জৈব সার ও প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান নিশ্চিত করে জমি তৈরি করতে হয়।
- জমিতে দুই থেকে তিনবার চাষ এবং মই দিয়ে সমান করতে হবে।
- বীজ বপনের আগে প্রতি হেক্টরে ১০ থেকে ১৫ কেজি বীজ প্রয়োজন হবে।
মাষকলাই চাষে সেচ ও সার
মাষকলাই চাষে সেচ ও সার ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। আমরা যদি সঠিক মাত্রায় সেচ ও সার প্রয়োগ না করি তাহলে ভালো ফলন পাওয়া সম্ভব নয়। তাই আমাদের মাষকলাই চাষে সেচ ও সার ব্যবস্থাপনা অনেক জরুরী। নিম্নে মাষকলাই চাষে সেচ ও সার ব্যবস্থাপনা উল্লেখ করা হলো।
সেচ ব্যবস্থাপনায় রয়েছে- খরিপ মৌসুমে সাধারনত বৃষ্টি নির্ভর থাকে। তবে রবি মৌসুমে প্রয়োজন অনুযায়ী এক থেকে দুইবার সেচ দিতে হতে পারে। তবে ৩ বার সেচ দিলে ভালো হয়। এই সেচটি অবশ্যই ১ বার বীজ বপনের সময় আরেকবার গাছ বৃদ্ধি হওয়ার সময় এবং শেষবার ফল ধরার সময়। ফল ধরার সময় সেচ দিলে ফলের আকার বড় হয় ও ভালো হয়।
আবার যদি কাঠা প্রতি হিসাব করা হয় তাহলে প্রতি কাঠায় প্রায় ১৭০ গ্রাম ইউরিয়া, ৩৩০ গ্রাম ফসফেট, সেই সাথে ১৩০ গ্রাম পটাশ প্রয়োগ করতে হবে।
এভাবে সেচ ব্যবস্থাপনা ও সার ব্যবস্থাপনা করলে ভালো ফলন পাওয়া সম্ভব হবে বলে আশা করা যায়।
মাষকলাইয়ের পোকা দমন
মাষকলাইয়ের পোকা দমন সম্পর্কে এখন আমরা বিস্তারিত জানবো। মাষকলাই গাছে বিভিন্ন ধরনের পোকা আক্রমণ করতে পারে যা ফলন কমিয়ে দিতে পারে। নিম্নে সাধারণত দেখা যায় কিছু পোকা দমনের ব্যবস্থাপনা নিয়ে আলোচনা করা হলো।
বিষন্ন পোকা
- লক্ষণঃ গাছের পাতায় বিষন্নভাব এবং পাতা হলুদ হয়ে যায়।
- দমন পদ্ধতিঃ নিম তেল বা অর্গানিক কীটনাশক স্প্রে করা যেতে পারে। এর পাশাপাশি বায়োলজিক্যাল কীটনাশক ব্যবহার করা যেতে পারে।
শোষক পোকা
- লক্ষণঃ গাছের পাতায় হলুদ দাগ পরে এবং পাতার নিচে সাদা পোকা দেখা যায়।
- দমন পদ্ধতিঃ সাদা পোকার জন্য বিটিলাস নামক কীটনাশক ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়া প্রতি লিটার পানিতে নিম তেল মিশিয়ে স্প্রে করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।
ফুলপোকা
- লক্ষণঃ ফুল ও বীজের দানাগুলো খেয়ে ফেলে, ফলে ফলন কমে যায়।
- দমন পদ্ধতিঃ বিটি স্প্রে বা মিটারিজিয়াম ভিত্তিক কীটনাশক ব্যবহার করা যেতে পারে। এছাড়াও গাছের চারপাশ পুরস্কার রাখতে হবে।
পাতা মোড়ানো পোকা
- লক্ষণঃ পাতা মুড়িয়ে রাখে এবং পাতা খায়।
- দমন পদ্ধতিঃ টেস্টের প্রয়োগ করতে পারেন এবং প্রতি সপ্তাহে গাছে কীটনাশক প্রয়োগ করুন।
উপরে উল্লেখিত কাজগুলো সঠিকভাবে করলে পোকামাকড় দমন করা সহজেই সম্ভব।
মাষকলাই ডাল সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন ও উত্তর
মাষকলাই ডাল সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন ও উত্তর জানা থাকলে আমারা ডালের ব্যাপারে কিছু জানতে ও বুঝতে পারবো। নিম্নে মাষকলাই ডাল সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন ও উত্তর উল্লেখ করা হলো।
প্রশ্নঃ মাষকলাই ডাল কি?
উত্তরঃ মাষকলাই ডাল হলো এক ধরনের মুসুর জাতীয় ডাল যা পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ। এটি বিভিন্ন পুষ্টি উপাদানে ভরপুর। এটি মূলত দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে বেশ জনপ্রিয়।
প্রশ্নঃ মাষকলাই ডালে কি থাকে?
উত্তরঃ প্রোটিন, ফাইবার বা আঁশ, ভিটামিন ও খনিজ থাকে।
প্রশ্নঃ মাষকলাই ডালে কোন পুষ্টি উপাদান পাওয়া যায়?
উত্তরঃ মাষকলাই ডালে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ডায়োটারি ফাইবার, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স বি১ - বি৬, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, ফসফরাস এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে।
প্রশ্নঃ মাষকলাই ডালে কি ওজন কমাতে সাহায্য করে?
উত্তরঃ হ্যাঁ, মাষকলাই ডালে ফাইবার বেশি থাকার কারণে এটি দীর্ঘক্ষণ পেট ভরে রাখে। ফলে অযথা খাওয়ার ইচ্ছা কমে যায়। এছাড়া প্রোটিনের কারণে ওজন কমাতে সাহায্য করে।
প্রশ্নঃ মাষকলাই ডাল কি প্রতিদিন খাওয়া যায়?
উত্তরঃ না, প্রতিদিন খাওয়া ঠিক নয়। এটি অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে নানা ধরনের সমস্যা হতে পারে। সপ্তাহে ১ থেকে ২ দিন খাওয়া এটি অনেক ভালো।
প্রশ্নঃ ডায়াবেটিস রোগীরা কি মাষকলাই ডাল খেতে পারবে?
উত্তরঃ হ্যাঁ, ডায়াবেটিস রোগীরা মাষকলাই ডাল খেতে পারে। কারণ এতে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম থাকে, যা রক্তের সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখতে সহায়ক।
প্রশ্নঃ মাষকলাই ডাল কোথায় পাওয়া যায়?
উত্তরঃ যে কোন মুদি দোকানে, সুপার মার্কেট এবং অনলাইন দোকানে পাওয়া যায়।
মাষকলাইয়ের যত্ন ও টিপস
এখন আমরা সংক্ষিপ্ত আকারে মাষকলাই এর যত্ন ও টিপস সম্পর্কে জেনে নিব। মাষকলাইয়ের কিছু যত্ন নেওয়া এবং কিছু টিপস আমাদের যদি জানা থাকে, তাহলে মাষকলাই ফলনে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
- ফসল পর্যবেক্ষণ- প্রতি সপ্তায় গাছ পর্যবেক্ষণ করা এবং প্রয়োজন হলে পোকা দমনের ব্যবস্থা নেওয়া।
- পরিষ্কার পরিছন্নতা- গাছের আশেপাশে আগাছা পরিষ্কার রাখতে হবে। আগাছা পরিষ্কার রাখলে ফলন ভালো হয়। কেনোনা আগাছা পরিষ্কার করলে গাছ দ্রুত বাড়ে এবং প্রয়োজনীয় আলো বাতাস পায়, ফলে ফলন বৃদ্ধি পায়।
- জৈব পদ্ধতি- কেমিক্যাল ব্যবহারের পরিবর্তে জৈব কীটনাশক ব্যবহার করলে জমির স্বাস্থ্য ভালো থাকে। সেই সাথে জমির উর্বরতা শক্তি নষ্ট হয় না।
শেষ মন্তব্য
উপরের আলোচনা শেষে বলা যায় যে মাষকলাই ডালে বেশ কিছু উপকারিতা থাকলেও এর অতিরিক্ত গ্রহণের ফলে অপকারিতা একটি লক্ষণীয় বিষয়। তাই আমাদের অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া থেকে বিরত থাকা দরকার।
আমরা যদি এ ডালের জন্য সঠিকভাবে চাষ করতে চাই, তবে অবশ্যই উপরে বর্ণিত বিষয়গুলো যত্ন সহকারে পড়বেন এবং সেই সাথে আপনারা চাষাবাদ করবেন। এভাবে যদি আপনি চাষাবাদ করেন তাহলে ভালো ফলাফল পাবেন বলে আশা করা যায়।
জিনেউস আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url