দূর্বা ঘাসের উপকারিতা:জেনে নিন এর রহস্যময়ী গুণ গুলো

দূর্বা ঘাসের উপকারিতা নানাবিধ রয়েছে। এই ঘাস সাধারণত মাঠের আইলে অথবা খেত খামারের আশেপাশে হয়ে থাকে। এই ঘাস খুব সহজেই চেনা যায়। নিম্নে এই ঘাসের উপকারিতার পাশাপাশি সকল গুণ আলোচনা করা হবে। আশা করছি আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়বেন।

দূর্বা-ঘাসের-উপকারিতা

প্রিয় পাঠক দূর্বা ঘাস বিভিন্ন নামে পরিচিত। এটি এক একটি অঞ্চলে একেক নামে পরিচিত। তবে এটা যে নামে পরিচিত হোক না কেন, এর উপকারী গুণগুলো অতুলনীয়। তাই আসুন আমরা একে একে জেনে নেয় দূর্বা ঘাসের বিভিন্ন ভেষজ গুণ থেকে শুরু করে এর বিভিন্ন উপকারিতা।

পেজ সূচিপত্রঃ দূর্বা ঘাসের উপকারিতাঃজেনে নিন এর রহস্যময়ী গুণ গুলো

দূর্বা ঘাসের উপকারিতা

দূর্বা ঘাসের উপকারিতা অনেক রয়েছে। এর উপকারিতা গুলো বর্ণনা করে সহজে শেষ করা যায় না। তবে আপনাদের মাঝে বিশেষ বিশেষ কিছু উপকারিতা ধারাবাহিকভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আশা করি এই প্রবন্ধটি মনোযোগ সহকারে পড়বেন।

এ ঘাস মানুষের উপকারের পাশাপাশি প্রাণী অর্থাৎ গরু, ছাগলের বিশেষভাবে উপকার করে থাকে। এ ঘাস বিভিন্ন জায়গায় দেখা যায়। আর এ ঘাসের বৈজ্ঞানিক নাম এবং এর কিছু ব্যবহারিক নাম বা ইংরেজি বাংলা নাম রয়েছে যা আমরা নিচের বিষয়গুলোতে ধীরে ধীরে জানবো।

এ ঘাস মানুষের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ এমন কি বিভিন্ন ধরনের রোগে আক্রান্ত হলে অভ্যন্তরীণ তাও সেটা প্রতিরোধ বা প্রতিকার করতে পারে। এটা এমন এক ধরনের ঘাস যার রহস্যময় গুণগুলো জানলে আপনি অবাক হবেন। তাই চলুন নিম্নের বিষয় থেকে ধীরে ধীরে সবকিছু স্পষ্ট ভাবে জেনে নেই। 

দূর্বা ঘাসে কি থাকে

দূর্বা ঘাসে কি থাকে আপনাদের কি মনে হয়। এত গুণসম্পন্ন একটি ঘাস অবশ্যই এতে কিছু না কিছু রয়েছে যার কারণে এর রহস্যময় গুণগুলো আপনাদের অবাক করে দিবে। এই ঘাসে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যে উপাদানগুলো থাকার কারণে আমাদের এই ঘাসকে রহস্যময় গুনে গুণন্বিত এ কথাটি বলতে হয়েছে।

দূর্বা ঘাস একটি ভেষজ ঔষধি গুণসম্পন্ন উদ্ভিদ। এতে প্রোটিন কার্বোহাইড্রেট ক্যালসিয়াম ফাইবার পটাশিয়াম পর্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়া যায়। এটি বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধ করতে সক্ষম আমরা এই বিষয়টি আরো ভালোভাবে পরের বিষয়গুলো থেকে জানতে পারবো।

এই ঘাসে যেমন প্রোটিন, কার্বোহাইডেট, ক্যালসিয়াম, ফাইবার, পটাশিয়াম পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকে বলে  আমরা ছাগলের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে উপরে বর্ণিত এই সকল উপাদান দিয়ে থাকতে পারি, অর্থাৎ ছাগল এই দূর্বাঘাস ব্যাপকভাবে খায়। এ খাওয়ার ফলে দেখা যায় তাদের প্রোটিন, কার্বোহাইডেট,  ক্যালসিয়াম এবং ফাইবার ও পটাশিয়ামের ঘাটতি সহজে পূর্ণ হয়।

দূর্বা ঘাসের বৈশিষ্ট্য ও চেনার উপায়

দূর্বা ঘাসের বৈশিষ্ট্য ও চেনার উপায় চলুন এ বিষয়টি বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক। দূর্বা ঘাসের কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে যেমন এর পাতা মসৃণ ও সরু, এটা সহজেই এভাবে চেনা যায়। এ ঘাস মূলত একগুচ্ছ আকারে থাকে কোন আলাদাভাবে এরা থাকে না এর পাতা অধিক সরু ও লম্বা। এটি মসৃণ এবং সবুজ বর্ণের হয়ে থাকে।

এটা আলাদাভাবে চাষাবাদ করার কোন প্রয়োজন হয় না এটা বিভিন্ন জমির আইলে, পরিত্যক্ত বাগান বাড়ির আঙিনার আশেপাশে দেখা যায়। এই ঘাসের ডগা অধিক নরম এটি সহজেই মুখ দিয়ে চিবানো যায়। এই ঘাস গরু ছাগলের খুব পছন্দের একটি ঘাস। এ ঘাস গরু ছাগলের অনেক শরীরের উপকার করে থাকে।

এছাড়া বিভিন্ন ধরনের প্রাণী যেমন খরগোশ, রাজহাঁস, হরিণ এই ঘাস খেয়ে থাকে। এ ঘাস খাওয়ার ফলে প্রত্যেকটা প্রাণীর অনেক উপকার হয়। নিম্নের বিষয়গুলোতে আপনারা ধারাবাহিকভাবে সকল কিছু বিস্তারিত জানতে পারবেন। তাই প্রিয় পাঠক আশা রাখছি আপনারা নিম্নের বিষয়গুলো মনোযোগ সহকারে ধারাবাহিকভাবে পড়বেন। 

দূর্বা ঘাসের সৃষ্টি ও বৈজ্ঞানিক নাম

দূর্বা ঘাসের সৃষ্টি ও বৈজ্ঞানিক নাম চলুন এবার আমরা এ বিষয়টি জেনে নেই। দূর্বা ঘাসের উপকারিতা এটা জানছি যেমন তাহলে এর সৃষ্টি ও বৈজ্ঞানিক নামটা আমাদের অবশ্যই জানা প্রয়োজন। যেহেতু এটি রহস্যময়ী গুনে ভরপুর একটি উদ্ভিদ সেহেতু বিষয় সম্পর্কে এ টু জেড আমাদের জানা প্রয়োজন। নিম্নে দূর্বা ঘাসের সৃষ্টি ও বৈজ্ঞানিক নাম বিস্তারিত তুলে ধরা হলো।

এ ঘাস মূলত জমির আইলে দেখা যায় তবে এছাড়া বিভিন্ন ধরনের জায়গা রয়েছে যা এদের সৃষ্টি দেখা যায় এদের সৃষ্টি মূলত আলাদাভাবে করতে হয় না এরা বিভিন্ন বাগানে পরিত্যক্ত জায়গা এবং জমির আইলে আপনা আপনি ভাবেই সৃষ্টি হয়। এই দূর্বা ঘাসের স্বাদ কষা মিষ্টি।

মূলত এটি (Poaceae) পরিবারের অন্তর্গত। এর বৈজ্ঞানিক নাম ( Cynodon dactylon pers) । দূর্বা ঘাস টারপিনয়েড যৌগ। এর ইংরেজি নাম ( Bermuda grass ) এবং বাংলায় একে দূর্বা ঘাস নামে অভিহিত করা হয়। এর অন্যান্য নাম রয়েছে ধুব, ইথানা ঘাস, ডুবো। এই গাছটি সারা দুনিয়ায় পাওয়া যায়। এটি অস্ট্রেলিয়া, আফ্রিকা, ইউরোপ এবং এশিয়ার বেশিরভাগ অঞ্চলে দেখা যায়।

দূর্বা ঘাসের কোন অংশটি ব্যবহার করা হয়

দূর্বা ঘাসের কোন অংশটি ব্যবহার করা হয় চলুন এবার এ বিষয়টি জেনে নেই। যেহেতু এই বিষয়ে আমরা অনেক কিছু জানলাম এটা আমাদের অনেক উপকার বয়ে নিয়ে আসে, তাই এর কোন অংশটি ব্যবহারের ফলে আমাদের অনেক উপকার হবে বা আমাদের কার্যকর হবে সে বিষয়ে সম্পর্কে চলুন এখন আমরা জেনে নেই।
দূর্বা-ঘাসের-কোন-অংশটি-ব্যবহার-করা-হয়

মূলত এ ঘাসের ডগাটি ব্যবহার করা হয়, এছাড়াও এই ঘাসের কান্ড এবং শিকড় বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। চলুন না এবার একটু জেনে নেই কোনটার কোন ধরনের কাজ হয়ে থাকে। ডগা ব্যবহৃত হয় মূলত এটা রস বেটে খাওয়ার জন্য। আর কান্ড ও শিকড় এটা বেটে রস করেও খাওয়া যায় আবার এটা একসাথে জড়িয়ে বিভিন্ন উপকরণের সাথে যোগ করে ব্যবহার করা হয়।

প্রিয় পাঠক আপনারা জানলেন আসলে দূর্বা ঘাসের কোন অংশটি ব্যবহার করা হয়। তাহলে বোঝা যায় যে দূর্বা ঘাসের ডগা, কান্ড এমনকি শিকড় পর্যন্ত ব্যবহার করা হয়ে থাকে। প্রত্যেকটির জন্য আলাদা আলাদা কাজে ব্যবহার করা হয়। নিম্নের বিষয়গুলোতে আমরা এগুলো ধারাবাহিকভাবে বিস্তারিত জানতে পারবো।

দূর্বা ঘাসের রস খেলে কি উপকার হয়

দূর্বা ঘাসের রস খেলে কি উপকার হয় আসুন এবার এ বিষয়টি আমরা জেনে নেই। মূলত দূর্বা ঘাসের ডগা রস করে খাওয়া হয়। এছাড়া বিভিন্ন রোগের ভিত্তিতে এর কান্ড ও শিকড় কাজে লাগানো হয়। তবে দূর্বা ঘাসের উপরের যে ডগাটি অর্থাৎ ওপরের অংশটি সে অংশটি রস করে খাওয়া যায়। কেননা সেই ডোগাটি হয় নরম।

এই নরম ডগা সহজেই পিসে রস করা যায়। আপনি এটা যেকোনো কিছুতে বাটতে পারবেন এমনকি ব্লেন্ডার জাতীয় কোন মেশিনে আপনি এর ডগা দিয়ে সহজে গুঁড়ো করে রস করতে পারবেন। এই রসে বিভিন্ন উপকার রয়েছে, নিম্নে সেই উপকার গুলো আপনাদের মাঝে তুলে ধরা হলো।

দূর্বা ঘাসের রস আমাদের পাকস্থলী পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। সেই সাথে এই রস নিয়মিত খেলে আমাদের মল নরম হয় এবং নিয়মিত হয়। তাহলে এখান থেকে আমরা জানতে পারলাম দূর্বা ঘাসের রস আমাদের পাকস্থলীর ব্যাপকক্রিয়ায় সহায়তা করে এবং শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।

দূর্বা ঘাসের রহস্যময়ী কয়েকটি গুণ

দূর্বা ঘাসের রহস্যময়ী কয়েকটি গুণ এই হেডলাইনটি দেখে হয়তো আপনি অবাক হচ্ছেন কিন্তু আসলে দূর্বা ঘাসের অনেক রহস্যময়ী গুণ রয়েছে যে গুণগুলো জানলে আপনি অবাক হবেন। নিম্নে দূর্বা ঘাসের  রহস্যময়ী কয়েকটি গুণ সম্পর্কে আপনাদের মাঝে তুলে ধরা হলো।

এর একটি অন্যতম রহস্যময়ী গুণ হচ্ছে যে ডালিমের পাতা বা ডালিমের ছালের রসের সঙ্গে এটা মিশিয়ে দূর্বা ঘাসের ডগা রস করে খেলে আমাশয় রোগ ভালো হয়। অন্যদিকে দূর্বা ঘাসের রস রক্ত পড়া, মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়া বন্ধ করতে সাহায্য করে।

এর অনেক গুণাবলী রয়েছে তার মধ্যে আরেকটি গুণাবলী হচ্ছে যখন কারো বমি বমি ভাব হয় তখন এর ডগার রস খেলে খুব সহজেই বমি বমি ভাবটা কমে যায়। আপনারা এই বিষয়গুলো জানতে পেরে অনেক উপকৃত হলে আমাকে ভালো লাগবে। তাই দয়া করে মনোযোগ সহকারে পড়বেন।

দূর্বা ঘাস খাওয়ার নিয়ম কি

দূর্বা ঘাস খাওয়ার নিয়ম কি? এটা খাওয়ার বেশ কিছু নিয়ম কানুন রয়েছে। এই নিয়ম কানুন গুলো যদি আমরা মেনে চলি তাহলে আমাদের যে রোগের জন্য খাব বা যে রোগ প্রতিরোধের জন্য খাব সেক্ষেত্রে আমাদের খুব উপকার হবে। তাই আসুন জেনে নেই দূর্বা ঘাসের উপকারিতা এই প্রবন্ধে দূর্বা ঘাস খাওয়ার সঠিক নিয়মকানুন।
দূর্বা-ঘাস-খাওয়ার-নিয়ম-কি

এই ঘাস আপনি রস করে খাওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই মনে রাখবেন যেন এটা আপনি খাওয়ার পরে খাবেন তাহলে দেখবেন আপনার বদহজম বা বমি বমি ভাব এ ধরনের সমস্যা খুব সহজেই দূর হবে। আরেক ক্ষেত্রে আপনি এই জিনিসটি যদি খাওয়ার আগে খান তাহলে দেখবেন আপনার পাকস্থলী পরিষ্কার রাখছে বা খুব সহজেই যে কোন খাবার হজম করতে সাহায্য করছে।

এরপরে আপনি যদি এটি প্রসাবের ইনফেকশনের জন্য খান তাহলে অবশ্যই এর রস আপনাকে দুই বেলা খেতে হবে অর্থাৎ সকালে খালি পেটে খেতে হবে এবং রাত্রেতে খালি পেটে খেতে হবে। তবে মনে রাখবেন এটা খাওয়ার পাশাপাশি এসব ইনফেকশনের জন্য অবশ্যই গ্লুকোজ জাতীয় কোন জিনিস খাবেন, যেন শরীরকে ঠান্ডা রাখে।

দূর্বা ঘাস মানুষের কি কি উপকার করে থাকে

দূর্বা ঘাস মানুষের কি কি উপকার করে থাকে? হ্যাঁ অবশ্যই দূর্বা ঘাস মানুষের বিভিন্ন উপকার করে থাকে। এমন বেশ কিছু উপকার করে থাকে যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই ভালো। আমরা অনেকাংশে অনেক ক্ষেত্রে ডাক্তারের কাছে গিয়ে বিভিন্ন নামিদামি ওষুধ খেয়ে এ সকল জিনিসগুলো ভালো করে থাকি, কিন্তু এই দূর্বা ঘাসের মাধ্যমে খুব সহজেই আমাদের শরীর উপকার হয়। এ বিষয়ে নিম্নে তুলে ধরা হলো।

প্রথমত দূর্বা ঘাস পাকস্থলী পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে, এরপরে এটি আমাদের বমি বমি ভাব কমায়।  এছাড়া এটা খেলে আমাদের মুখের রুচি বাড়ে এর পাশাপাশি এটা আমাদের মুখের ঘা বা মাড়ির রক্ত পরা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে, সেই সাথে প্রসাবের ইনফেকশন দূর করতে সাহায্য করে থাকে। এরকম নানা ধরনের সমস্যা যেটা আমাদের সমাধান করে।

ওপরে বর্ণিত আলোচনা থেকে বোঝা যায় যে এটা মানুষের ক্ষেত্রে অনেক উপকার বয়ে নিয়ে আসে। শরীরের উপকারের পাশাপাশি এটা শরীরের বাহিক উপকারও করে থাকে। যেমন- কোন জায়গায় যদি কেটে যায় সেই রক্ত পড়া বন্ধ করতে এটা সাহায্য করে এর পাশাপাশি কোন ক্ষতস্থান থাকলে সেখানে বা সেই ক্ষতস্থানে এটি লাগালে খুব সহজে ক্ষতস্থানটি সেরে যায়। তাহলে আমরা বুঝলাম যে খুব সহজেই এটা মানুষের বিভিন্ন ধরনের উপকার করে থাকে।

রক্ত পরা বন্ধ করতে দূর্বা ঘাস

রক্ত পরা বন্ধ করতে দূর্বা ঘাসের ভূমিকা বা গুরুত্ব অপরিসীম। কিভাবে এটা প্রয়োগ করলে আমাদের কাঁটা স্থানে রক্ত পড়া বন্ধ হবে সে বিষয়ে দূর্বা ঘাসের উপকারিতা এই প্রবন্ধে চলুন বিস্তারিত জেনে নেই। নিম্নে এখন এ বিষয়টি আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করা হলো। 

আপনি যদি গ্রামাঞ্চলে বসবাস করে থাকেন, তাহলে হঠাৎ করে কোন জায়গায় যদি আপনার কেটে যায় সে রক্ত পড়া না বন্ধ হয় সে ক্ষেত্রে আপনি দেখবেন যে আপনার আশেপাশেই এই দূর্বা ঘাসের ডগা দেখা যাচ্ছে। আপনি শুধু একটি কাজ করবেন যে ওখান থেকে দূর্বা ঘাসের কয়েকটি ডগা ছিড়ে আপনি সেটাকে বেটে অথবা যাই হোক কাটা স্থানে লাগিয়ে দিলে দেখবেন রক্ত পড়া বন্ধ হয়ে গেছে।

কাঁটা স্থানে রক্ত পড়া বন্ধ করতে খুব গুরুত্ব আকারে সাহায্য করে থাকে যখন কোন দূর্বা ঘাসের ডগা আপনি নিজে চিবিয়ে সেটা রস যদি কাটা স্থানে লাগান বা প্রয়োগ করেন দেখবেন যে খুব সহজেই রক্ত পড়া বন্ধ হচ্ছে। কেননা মুখের লালা এবং দূর্বা ঘাসের রস একসাথে সেটা রক্ত পড়া বন্ধ করতে অনেক সাহায্য করে। মুখের লালাতে এনজাইম ও অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল এজেন্ট থাকে তাই রক্ত পড়া বন্ধ করে।

প্রসাবের ইনফেকশন প্রতিরোধ করতে দূর্বা ঘাস

প্রসাবের ইনফেকশন প্রতিরোধ করতে দূর্বা ঘাস কিভাবে কাজ করে এবং কিভাবে খেলে এটা আপনার প্রসবের ইনফেকশন প্রতিরোধ করতে বা দূর করতে সাহায্য করবে সে বিষয়ে আসুন দূর্বা ঘাসের উপকারিতা এই আর্টিকেল থেকে বিস্তারিত জেনে নেই।

হঠাৎ করে যদি দেখেন আপনার প্রসাবে অনেক জ্বালাপোড়া হচ্ছে সে ক্ষেত্রে আপনি যদি এই দূর্বা ঘাসের ডগার রস খান তাহলে দেখবেন যে খুব সহজেই এটা আপনার সমাধান হয়ে যাচ্ছে। প্রসাবের এ জ্বালাপোড়া বা প্রসাব করলেই জ্বলছে এটা গ্রামাঞ্চলে খরাস হওয়া বলে। এটা যখন হয় অবশ্যই আপনি খুব তাড়াতাড়ি দূর্বা ঘাসের ডগা এবং এর কান্ড একসাথে করে এর রস খাবেন তাহলে দেখবেন যে আপনি অল্প সময়ে সুস্থ্য হয়ে গেছেন। 

এর এমন একটি গুণ রয়েছে যে গুণ থাকার কারণে আপনি প্রসাবের ইনফেকশন বা প্রসাবে যে জ্বালাপোড়া হয় তা খুব সহজেই দূর করতে সাহায্য করে। এর পাশাপাশি ঠান্ডা জাতীয় জিনিস খেলে প্রসাবের ইনফেকশনটি তাড়াতাড়ি ভালো হয়ে যায়। 

তবে প্রসাবের ইনফেকশনের ক্ষেত্রে এটা বেশ কিছুদিন নিয়মিত খেতে হবে। আপনি এটি সকালে খালি পেটে ১৪ দিন এবং রাত্রিতে খালি পেটে ১৪ দিন যদি খেতে পারেন তাহলে অবশ্যই দেখবেন যে আপনার প্রসাবে ইনফেকশনটি ভালো হয়ে যাচ্ছে। তবে যাদের অধিক মাত্রায় হয় অবশ্যই হেকিম অথবা বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছ থেকে পরামর্শ নেবেন।

মুখের ঘা প্রতিরোধে দূর্বা ঘাস

মুখের ঘা প্রতিরোধে দূর্বা ঘাস ভূমিকা অনেক বেশি। এটি খুব সহজে আপনার মুখের ঘা প্রতিরোধ করতে বা প্রতিকার করতে সাহায্য করে। আসুন জেনে নেই কিভাবে মুখের ঘা প্রতিরোধ করতে বা প্রতিকার করতে দূর্বা ঘাসের গুরুত্ব অনেক বেশি।

দূর্বা ঘাস আমাদের আশেপাশে দেখতে পাওয়া যায় যদি আমরা গ্রামে বসবাস করে থাকি তবে শহরের ক্ষেত্রে যেখানে খোলা জায়গা বা যেখানে মাটি রয়েছে সেই ক্ষেত্রে দেখা যাবে যে সেখানে এ ধরনের ঘাস খুব সহজেই লক্ষ্য করা যায়।

আমরা অনেক সময় সামান্য একটু মুখে ঘা এর জন্য ডাক্তারের কাছে ছুটে যায় কিন্তু আপনার বাড়ির কাছে যে সমাধান রয়েছে সেটা আপনি কখনো ভাবেন না। মুখের ঘা প্রতিরোধ করতে বা প্রতিকার করতে দূর্বা ঘাসের রস মুখে নিয়ে কিছুক্ষণ থাকলে দেখবেন যে খুব সহজেই সেই ঘা ভালো হয়ে যাচ্ছে।

এই ঘাসে যেহেতু বিভিন্ন ধরনের প্রোটিন, পটাশিয়াম, কার্বোহাইড্রেট ও ফাইবার এগুলো থাকে। এগুলো থাকার কারণে ও এই দূর্বা ঘাসে সবুজ থাকার কারণে ভিটামিন সি লক্ষ্য করা যায়, যার ফলে মুখের ঘা খুব সহজেই প্রতিরোধ বা প্রতিকার করা যায়।

মুখের রুচি বাড়াতে দূর্বা ঘাস

মুখের রুচি বাড়াতে দূর্বা ঘাস কিভাবে কাজ করে থাকে চলুন এ সম্পর্ক এখন আমরা জেনে নেই। অনেক বাচ্চাদের এবং প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের মুখের রুচি কমে যায়। তাই তাদের ঘরোয়া চিকিৎসা দিতে দূর্বা ঘাস আপনারা ব্যবহার করতে পারেন।

আপনার বাচ্চার যদি মুখের রুচির অভাব থাকে এবং আপনার রুচির অভাব হলে এই ঘাসের ডগার রস খেয়ে দেখবেন যে খুব অল্প দিনেই মুখের রুচি ফিরে আসবে। কেনোনা এর মধ্যে যেসকল উপাদান থাকে এসকল উপাদানের কারণে মুখের রুচি ফিরে আসে।

আপনাদের এ বিষয় বলছি এ কারণ হচ্ছে আমি নিজেই এর প্রমাণ। একবার আমার মুখের রুচি কমে গেছিলো আমি এই দূর্বা ঘাসের ডগার রস করে খেয়েছিলাম, এক সপ্তাহ পর আমার মুখের রুচি ফিরে এসেছিল। তাই আপনাদের পরামর্শ দিলাম।

তবে একটি বিষয় মনে রাখবেন যদি কোন রোগ বা কোন কিছু গুরুতর হয়, তবে প্রাথমিক চিকিৎসা বা প্রাথমিকভাবে কোন কিছু করার আগে ভালো হেকিম কিংবা ভালো কোন বিশেষজ্ঞের কাছে পরামর্শ নেবেন।

দূর্বা ঘাস ছাগলের জন্য যে উপকার বয়ে আনে

দূর্বা ঘাস ছাগলের জন্য যে উপকার বয়ে আনে চলুন এবার এ বিষয়টি জেনে নেওয়া যাক। ঘাস মূলত ছাগলের জন্যই হয়ে থাকে, তবে এটা মানুষের উপকার করে। কারণ বিভিন্ন ঘাস বা উদ্ভিদে দেখা যায় যে ভেষজ ঔষধি গুন সম্পন্ন। যার কারণে মানুষেরও কাজে লাগে তো মানুষের কাজের পাশাপাশি কিন্তু তাদের অনেক উপকার হয় অর্থাৎ প্রাণী জগতের যারা তৃণভোজী।

নিয়মিত দূর্বা ঘাস খাওয়ার ফলে ছাগল বা গরু কিংবা হরিণ কিংবা খরগোশ এ জাতীয় তৃণভোজির ক্ষেত্রে দেখা যাবে যে এদের কখনো মুখে ঘা বা মুখ দিয়ে রক্ত পড়া এ সকল বিষয় লক্ষ্য করা যায় না। তাছাড়া যারা দুগ্ধজাত গাভী এবং ছাগল পালন করে দুধ উৎপাদন ক্ষেত্রে অনেক উপকার হয় এই ঘাস খাওয়ালে।

তাছাড়া এই ঘাসে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, পটাশিয়াম, ফাইবার, কার্বোহাইড্রেট থাকার কারণে ছাগল গরু বা অন্যান্য তৃণভোজী প্রাণীর শরীরে শক্তি যোগায়। পাকস্থলী পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে এবং হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।

গ্রামাঞ্চলে বেশিরভাগ যারা মানুষ আছেন তারা অবশ্যই ছাগল বা ছাগী পালন করে থাকে বা গরু ও গাভী পালন করে থাকে। তো এক্ষেত্রে দেখা যায় তারা বিভিন্ন জমির আইল ঘুরে ঘুরে বা বিভিন্ন বাগান থেকে এ ধরনের ঘাস সংগ্রহ করে গরু-ছাগলকে খাওয়াই। যার ফলে খামারির চেয়ে এরা লাভবান বেশি হয়।

দূর্বা ঘাস সম্পর্কে সাধারণ প্রশ্ন ও উত্তর

দূর্বা ঘাস সম্পর্কে সাধারণ প্রশ্ন ও উত্তর এখন আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করা হবে। আমাদের অনেকের মনে অনেক ধরনের প্রশ্ন থাকে এটা সম্পর্কে বা এ আলোচনা সম্পর্কে আপনাদের অনেকের মনে অনেক ধরনের প্রশ্ন থাকতে পারে তাই কিছু সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করা হলো।

প্রশ্নঃ দূর্বা ঘাস দেখতে কেমন?
উত্তরঃ দূর্বা ঘাস সবুজ বর্ণের এর ডগা চিকন বা সরু এবং কান্ড সরু লম্বা।
প্রশ্নঃ দূর্বা ঘাস কি আসলেই এত গুণাবলী সম্পন্ন?
উত্তরঃ হ্যাঁ অবশ্যই! দূর্বা ঘাস রহস্যময় বিভিন্ন ধরনের গুণ সম্পন্ন।
প্রশ্নঃ এই ঘাস কি সত্যিই রক্ত পড়া বন্ধ করে?
উত্তরঃ এই ঘাস রক্ত পড়া বন্ধ করে যদি এটা মুখের লালার সাথে এই ডগার রসটি ব্যবহার করা হয়।
প্রশ্নঃ এটা মুখের রুচি বাড়াতে কতটা কার্যকরী?
উত্তরঃ এটা মুখের রুচি বাড়াতে অনেক কার্যকরী। ব্যক্তি ক্ষেত্রে এটি আলাদা হতে পারে, তবে আমি নিজেই প্রমাণ এটা মুখের রুচি বাড়াতে অনেক কার্যকরী।
প্রশ্নঃ যারা খামারি তারা তো নেপিয়ার ঘাস খাওয়ায় বা অন্যান্য ঘাস খাওয়ায়, তো তারা তো আর দূর্বা ঘাস খাওয়ায় না তো সে ক্ষেত্রে কি কোনো সমস্যা হবে?
উত্তরঃ না মোটেও না খামারিরা যে সকল ঘাস খাওয়ায় সেসকল ঘাস এ ধরনের পুষ্টিগুণ সম্পন্ন বিদ্যমান যার ফলে খামারিদের গরু ছাগলের জন্য কোন সমস্যা হয় না। তবে তাদের যেহেতু এটা তৈরি করতে হয় সে ক্ষেত্রে আলাদা তাদের খরচ হয়।

আশা করছি এ ধরনের প্রশ্ন ও উত্তরের আপনাদের অনেক উপকারে আসবে।

ছবি দেখে দূর্বা ঘাস চিনুন

ছবি দেখে দূর্বা ঘাস চিনুন হ্যাঁ আপনাদের চেনার জন্য বা আপনারা অনেকেই এ ঘাস চিনতে পারবেন না। তাই আপনাদের চেনার সুবিধার ক্ষেত্রে আমি এই আর্টিকেলে কয়েকটি ছবি দিয়েছি যেন আপনারা খুব সহজেই ঘাস চিনতে পারেন। নিম্নে কয়েকটি ছবি আপনাদের মাঝে দেওয়া হল যেন আপনারা দূর্বা ঘাস চিনতে পারেন।

দূর্বা ঘাস





শেষ মন্তব্য

উপরে সকল আলোচনা থেকে বোঝা যায় যে দূর্বা ঘাসের রহস্যময়ী গুণ আসলেই বিদ্যমান রয়েছে। আমরা এতক্ষণ থেকে যা পড়লাম বা জানলাম আশা করছি যে আপনাদের অনেক উপকার আসবে।

তাই প্রিয় পাঠক আপনারা অবশ্যই আমার এই ওয়েবসাইটটি নিয়মিত তথ্য পেতে ভিজিট করবেন এবং আমার পাশে থাকবেন বলে আমি আপনাদের কাছে আন্তরিকভাবে আশা রাখছি।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

জিনেউস আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url