শসার উপকারিতা ও অপকারিতা:জানুন এ টু জেড

শসার উপকারিতা ও অপকারিতা আপনি এই প্রবন্ধে শসার সকল কিছু বিস্তারিত অর্থাৎ এ টু জেড জানতে পারবেন। তাই শসার উপকারিতা ও অপকারিতা এ টু জেড জানতে অবশ্যই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে করবেন বলে আমি আশা করছি।

শসার-উপকারিতা-ও-অপকারিতাএই আর্টিকেলে শসার বিভিন্ন উপকারিতা এবং শসা যে আমাদের শরীরে কেমন ভাবে কাজ করে থাকে ও এর পাশাপাশি শসার বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান আমাদের শরীরে কি কি কাজ করে সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। এর যদি কিছু অপকারিতা থাকে সে সম্পর্কেও আলোচনা করা হবে।

পেজ সূচিপত্রঃ শসার উপকারিতা ও অপকারিতা:জানুন এ টু জেড

শসার উপকারিতা ও অপকারিতা

শসার উপকারিতা ও অপকারিতা এখন আপনাদের মাঝে এ সম্পর্কে এ টু জেড আলোচনা করা হবে  ধারাবাহিকভাবে। আশা করছি আলোচনাগুলো মনোযোগ সহকারে পড়বেন। আমি আরো আশা রাখছি যে আপনি যদি এটি মনোযোগ সহকারে পড়েন, তাহলে অবশ্যই কিছু জ্ঞানগর্ভ কথা এবং কিছু তথ্য জানতে পারবেন। নিম্নে শসার উপকারিতা ও অপকারিতা তুলে ধরা হলো-

শসার উপকারিতা-
শসার বেশ কিছু উপকারিতা রয়েছে যা আমাদের শরীরের বিভিন্ন প্রয়োজন মিটিয়ে থাকে। বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন ও মিনারেল যা আমাদের শরীরে কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এছাড়া এর এমন বিশেষ কিছু উপকারিতা রয়েছে যা শুনলে বা জানলে আপনি অবাক হবেন। তাই আমি আশা করছি আপনারা নিম্নের বিষয়গুলো ধারাবাহিকভাবে পড়ে শসার সকল উপকারিতা জেনে নিবেন।

শসার অপকারিতা-
শসার তেমন অপকারিতা নেই তবে অতিমাত্রায় গ্রহণ করার ফলে এর কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া বা অপকারিতা লক্ষ্য করা যায়। তাছাড়া সঠিক পরিমাণে যদি আপনি এটি খেয়ে থাকেন এবং নিয়ম মেনে যদি খেতে থাকেন তাহলে এর অপকারিতা তেমন লক্ষ্য করা যাবে না। এর অপকারিতার চাইতে উপকারিতা অনেক বেশি।

শসার অপকারিতা নাই বললেই চলে, তবে অধিক মাত্রায় গ্রহণ এর পাশাপাশি নিয়ম না মেনে গ্রহণ করলে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি শরীরের মাঝে দেখা দিতে পারে। তবে এটা সাময়িক সময়ের জন্য। তাছাড়া দীর্ঘমেয়াদি যদি নিয়ম না মেনে নেওয়া হয় তবে শরীরে ক্ষতি হতে পারে। তাই আসুন আমরা সঠিক নিয়ম মেনে চলি এবং সুস্থ থাকে।

শসার বিভিন্ন উপকারিতা জানতে এবং শসা কিভাবে খেতে হবে এবং কোন সময় খেলে আমাদের শরীরের জন্য ভালো এবং এটার খাওয়ার সঠিক সময়, সঠিক পদ্ধতি, সঠিক নিয়ম আমরা যদি জেনে থাকি, তাহলে আমাদের জন্য ভালো। তাই এগুলো জানতে নিম্নের বিষয়গুলো মনোযোগ সহকারে পড়বেন বলে আশা রাখছি।

শসা গাছ দেখতে কেমন

শসা গাছ দেখতে কেমন চলুন এবার আমরা এ বিষয়টি জেনে নেই। আসলে শসার উপকারিতা সম্পর্কে জানার আগে অবশ্যই আমাদের জানতে হবে আসলে গাছটা দেখতে কেমন। সেই সাথে এই গাছের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আমাদের জানতে হবে। নিম্নে শসা গাছ দেখতে কেমন এ সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আকারে আলোচনা করা হলো-

শসা গাছ মূলত সরু আকৃতির হয়ে থাকে অর্থাৎ এটা চিকন এবং লম্বা হয়। এটা মাচাতে এমনকি মাটিতেও হয়ে থাকে। এর কান্ড বা ডগা বলেন না কেন এরা লতার মতন মাচাতে চলে যায়। এ গাছের পাতা হালকা গোল আকৃতির হলেও এর মধ্যে একটি নকশা থাকে অর্থাৎ এটা প্রায় দেখতে চাল কুমড়ো গাছের পাতার মতো।

এর পাতা সবুজাকৃতির হয়ে থাকে। এর পাতা অনেক খসখসে। এর পাতা খসখসে হওয়ার কারণে যদি কারো ত্বকে লাগে তখন দেখা যায় সেখানে জ্বালাপোড়া করছে। কিছু সাদা সাদা এক ধরনের খসখসে পদার্থ থাকে যার কারণে ঘষা লাগলেই সেখানে চুলকায় বা জ্বালা করে। নিম্নে শশা গাছের কয়েকটি ছবি আপনাদের চেনার সুবিধার ক্ষেত্রে দেওয়া হলো-



ছবিতে একটি দেশি জাতের শসার গাছ ও শসা দেখলেন।

শসা কত ধরণের রয়েছে

শসা কত ধরণের রয়েছে চলুন এবার এ বিষয়টি জেনে নেওয়া যাক। শসা মূলত দুই ধরনের হয়ে থাকে, যেমন একটি হলো দেশি জাত আরেকটি হলো হাইব্রিড জাত। এছাড়া শসার বিকল্প বা শসার জাতভাই হিসেবে খিরাকে ধরা হয়। খিরা দেখতে খাটো এবং মোটা আকৃতির হয়ে থাকে। 

তবে দেশি শসা লম্বা হয়ে থাকে। হাইব্রিড দেখতে দেশি জাতের চেয়ে আরও বেশি লম্বা আকৃতির ও মোটা আকৃতির হয়ে থাকে। দেশি জাতটি হালকা সবুজ আকৃতির হয়। অন্যদিকে হাইব্রিট জাতটি গাড়ো সবুজ আকৃতির হয়ে থাকে।

শসার বেশ কয়েকটি জাত রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য জাত হলো দেশি জাত, এ দেশী জাতটি বাংলাদেশের ব্যাপকভাবে চাষ করা হয় এর পাশাপাশি হাইব্রিডটাও চাষ করা হয়। হাইব্রিডের ফলন বেশি হলেও এর চাহিদা একটু কম। তাই অধিকাংশ কৃষক দেশি শসা চাষ করতে পছন্দ করেন।

তবে যারা খামারি বা বিভিন্ন উদ্যোক্ত হন তারা অবশ্যই হাইব্রিডটা বেছে নেন, কারণ এতে ফলন বেশি হয়। হাইব্রিড শসার অধিক ফলন হওয়ার কারণে যারা নতুন খামারি উদ্যোক্তা বা কৃষি উদ্যোক্তা তারা এ ধরনের চাষাবাদ করে। তবে গ্রামাঞ্চলে বেশিরভাগ মানুষই এটার স্বাদের কারণে দেশিটি বেশি চাষাবাদ করে।

দেশী জাত অল্প পরিমাণ হলেও এর স্বাদের কারণে চাহিদা অনেক বেশি এবং দামটা অনেক বেশি পাওয়া যায়। তাই গ্রাম অঞ্চলে ১০০ লোকের মধ্যে ৮০ জনকেই দেখা যাবে যে তারা দেশি শসা চাষ করতে পছন্দ করছেন এবং দেশি শসা বেছে নিয়েছেন চাষ করার জন্য।

শসা গাছ থেকে শসা কত দিনে উত্তলোন করা হয়

শসা গাছ থেকে শসা কত দিনে উত্তলোন করা হয় চলুন এবার এ বিষয়টি শসার উপকারিতা ও অপকারিতা আর্টিকেল থেকে বিস্তারিত জেনে নেই। শসা লাগানোর কয়দিন পরে শশা উত্তোলন করা যায় সে সম্পর্কে আমরা এখন জানবো। শসা গাছে খুব তাড়াতাড়ি ফলন আসে। আবার শসা খুব তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যায় অর্থাৎ শসা দাগি হয়।
শসা-গাছ-থেকে-শসা-কত-দিনে-উত্তলোন-করা-হয়
সাধারণত শসা গাছে ফুল আসা শুরু করে ২৫ থেকে ৩০ দিনে মধ্যে এবং এর ফলন উত্তোলন করা যায় এ গাছ লাগানোর পর থেকে ৪০ থেকে ৪৫ দিনের ভেতরে। অর্থাৎ ফুল যখন আসে তার প্রায় এক সপ্তা বা ১০ দিন পরে এটা বাজারজাত করা যায়। শসা গাছ আপনি যদি লাগান তাহলে এর ৪০ দিনের পর থেকেই আপনার সম্পূর্ণরূপে ফল পেতে থাকবেন।

দেশি শসা বা হাইব্রিড শসার ভেতর কোন পার্থক্য নেই এই দুই ধরনের শসা খুব তাড়াতাড়ি ফলন দিয়ে থাকে। অর্থাৎ দেশি অথবা হাইব্রিড এই দুই জাতের শসা মাত্র ৪০ দিনের মধ্যেই কাঙ্খিত ফলন দেয়। ৪০ থেকে ৪৫ দিনের মধ্যেই এই ফলন আপনি বাজারজাত করতে পারবেন।

আপনি যদি শশা গাছ সঠিক যত্ন ও পরিচর্যা করতে পারেন তাহলে দেখবেন এটা লাগানোর প্রায় ২৫ দিনের পরেই অল্প পরিমানে ফুল দেখা যাবে। এর কিছুদিন পরেই অর্থাৎ সাত থেকে দশ দিনের পরেই দেখবেন যে আরো বেশি বেশি ফুল এবং সাথে ফলন বেশ লক্ষ্য করা যায়। অর্থাৎ ভালো পরিচর্যা পেলে একটি গাছ ৪০ দিনের মধ্যেই পর্যাপ্ত পরিমাণে ফলন দিয়ে থাকে।

শসাতে থাকা বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান

শসাতে থাকা বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান রয়েছে যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই প্রয়োজন। চলুন শসার উপকারিতা ও অপকারিতা এই আর্টিকেল থেকে এবার জেনে নেওয়া যাক শসাতে থাকা বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান সম্পর্কে। শসা এমন একটি খাবার যে আমরা বিভিন্নভাবে খেতে পারি। নিম্নে এর পুষ্টি উপাদান গুলো তুলে ধরা হলো-

শসাতে থাকে পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও মিনারেল। এছাড়া আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান রয়েছে যেমন- ডায়েটারি ফাইবার। এই ডায়েটারি ফাইবার হজম শক্তি বৃদ্ধিতে এবং পেট পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। শসাতে প্রায় ৯৫% মিনারেল থাকে। এত মিনারেল থাকার কারণে আমাদের শরীরে এটি মিনারেলের ঘাটতি পূরণ করতে বিশেষ ভূমিকা রাখে।

এছাড়া শসাতে রয়েছে আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন যেমন- ভিটামিন এ বি ও সি। এসকল ভিটামিন উপাদান গুলো আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় পাশাপাশি শরীরের কর্মক্ষমতা বাড়াতে বিশেষভাবে সাহায্য করে থাকে।

এটি এমন একটি সবজি যা কাঁচা বা রান্না করে খাওয়া যায়। এমনকি এটি সালাদ হিসেবে বেশি ব্যবহৃত হয়। শসাতে একই সাথে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন থাকায় শসা একটি পুষ্টিগুণে ভরপুর সবজি। এ সবজিতে একাধারে পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন এ, বি, ও সি এবং প্রচুর পরিমাণে মিনারেল থাকার জন্য এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

প্রতিদিন শসা খেলে কি হয়

প্রতিদিন শসা খেলে কি হয় চলুন না এবার এ বিষয়টি বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক। প্রতিদিন শসা খেলে আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের উপকার হয়। আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না আমাদের শরীরে কি ধরনের উপকার হয়। তাই চলুন নিম্নে জেনে নেই প্রতিদিন শসা খেলে আসলে কি উপকার হয়।

আপনি যদি প্রতিদিন শসা খান তাহলে আপনার শরীর থেকে বিষাক্ততা দূর করবে। শসাতে যে পানি থাকে এই পানি আমাদের শরীরের বা দেহের বর্জ্য ও বিষাক্ত পদার্থ অপসারণ করতে সাহায্য করে। আপনি যদি প্রতিদিন শসা খান তাহলে আপনার কর্ম ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।

এছাড়া আপনি যদি প্রতিদিন শসা খেতে থাকেন এবং আপনার যদি কোন ধরনের কিডনিতে পাথর হয়ে থাকে তাহলে সেই পাথর গলাতে সাহায্য করে এই শসা। আপনি যদি নিয়মিত শসা খান তাহলে আপনার কিডনিতে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। আর যদি আপনার কিডনিতে সৃষ্ট কোন পাথরও থাকে তাহলে অবশেষে গলাতে সাহায্য করে।

প্রতিদিন শসা খেলে আপনার পেট পরিষ্কার থাকবে। কেননা এই শসাতে ডায়েটারি ফাইবার থাকে। এই ফাইবার থাকার কারণে পাকস্থলী পরিষ্কার রাখতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। এই ফাইবার হজম শক্তি অর্থাৎ স্বাস্থ্যকর হজম শক্তি বৃদ্ধি করে। তাই যদি আপনি প্রতিদিন শসা খান তাহলে আপনার পাকস্থলী পরিষ্কার থাকবে।

শসা খেলে কি গ্যাস হয়

শসা খেলে কি গ্যাস হয় চলুন এ বিষয়টি ভালোভাবে এবং সুন্দরভাবে ও সঠিকভাবে বিস্তারিত জেনে নেই। শসা খেলে কি আসলেই গ্যাস হয় না এটি একটি ভ্রান্ত ধারণা চলুন এ বিষয়ে আপনাদের মাঝে এখন আলোচনা করা যাক। নিম্নে শসা খেলে কি গ্যাস হয় এ বিষয়ে সম্পর্কে বিশেষভাবে আলোকপাত করা হলো-
শসার-উপকারিতা-ও-অপকারিতা-জানুন-এ-টু-জেড
শসা খেলে গ্যাস বা কোন ধরনের গ্যাসের সমস্যা হয় না। কিন্তু আপনি যদি এটি অধিক পরিমাণে খেয়ে থাকেন তাহলে আপনার গ্যাসের সমস্যা হতে পারে। আপনি যদি শসা অধিক পরিমাণে অর্থাৎ নিয়মের বাইরে খেলে আপনার গ্যাসের সমস্যা হতে পারে। তাই আমাদের সঠিকভাবে সঠিক নিয়মে খাওয়া উচিত।

তাছাড়া শসা খেলে সাধারণত গ্যাসের সমস্যা হয় না। তবে আমরা যদি রাতে শসা খায় তাহলে আমাদের গ্যাসের সমস্যা হতে পারে। রাতে যদি আমরা শসা খায় তাহলে এর পার্শ্বতিক্রিয়া হিসেবে পেটে গ্যাসের সমস্যা হতে পারে। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে শসাতে থাকা কিউকারবিটাসন। এই উপাদান থাকার কারণে পেটের ফোলা ভাব বা পেট ফাঁপা হয়।

অনেকেই মনে করেন শসা খুব তাড়াতাড়ি হজম করে, ফলে বেশি পরিমাণে খান। এতে শরীরে পটাশিয়ামের মাত্রা বেড়ে যায়, ফলে পেটে ফোলাভাব সৃষ্টি হয়। তাই আমাদের সঠিক পরিমাণে এটা খাওয়া উচিত। কেননা অতিরিক্ত কোন কিছুই ভালো নয়।

শসা খেলে কি চর্বি কমে

শসা খেলে কি চর্বি কমে হ্যাঁ অবশ্যই কমে তবে আপনাকে জানতে হবে কিভাবে এ শসাটা খেতে হবে।  নিম্নে শসা খাওয়ার সঠিক নিয়ম-কানুন অবশ্য তুলে ধরেছি, কিন্তু এখন আপনার জন্য বলে দেই যে কিভাবে শসা খেলে চর্বি কমবে।

শসা তে প্রচুর পরিমাণে পানি থাকার কারণে এটা খেলে আমাদের ক্ষুধা কম লাগে। এছাড়া এতে এন্টিঅক্সিডেন্টের গুণের কারণে বিপাকের হার বাড়ায় ফলে এটা দ্রুত মেদ কমাতে সাহায্য করে। এটা আপনাকে প্রাকৃতিকভাবে মেদ কমাতে সাহায্য করবে।

অনেক পুষ্টিবিদের মতে এটি হলো কম ক্যালোরিযুক্ত সবজি, এতে বেশিরভাগই পানির পরিমাণ বেশি । অর্থাৎ ১০০ গ্রাম একটি শসাতে প্রায় ৯৫ গ্রাম পানি। এটি লোক্যালোরি হওয়ায় খুব সহজে মেদ কমে। 
শসা এমন একটি সবজি যা ওজন কমাতে বা চর্বি কমাতে দারুণভাবে সাহায্য করে থাকে।

ওজন কমাতে শসা খাওয়ার নিয়ম

ওজন কমাতে শসা খাওয়ার কিছু নিয়ম কানুন রয়েছে। চলুন আমরা জেনে নিই এসকল নিয়ম কানুন সম্পর্কে বিস্তারিত। নির্দিষ্ট পরিমাণে ওজন কমাতে শসা খাওয়ার সঠিক কিছু নিয়ম রয়েছে সেই নিয়ম জানা থাকলে আমরা খুব সহজে ওজন কমাতে পারবো। নিম্নে ওজন কমাতে শসা খাওয়ার নিয়ম গুলো তুলে ধরা হলো-

আপনি যদি শসার সাথে পালং শাক ও টমেটো একসাথে করে খান, তাহলে খুব তাড়াতাড়ি ওজন কমাতে সাহায্য করবে। শসার সালাতের ওপর চিজ ছিটিয়ে দিয়ে খেলে ওজন কমে দ্রুততার সাথে। এছাড়া বিভিন্ন পুষ্টিবিদের মতে শসার সাথে অলিভ অয়েল অথবা তিসির তেল একসাথে করে খেলে খুব দ্রুততার সাথে ওজন কমে।

আপনি যদি সত্যিই আপনার ওজন কমাতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে নিম্নে বর্ণিত নিয়ম গুলো মেনে চলতে হবে। এভাবে নিয়ম মেনে চললে আপনি দেখবেন ১৫ দিনের ভিতরে আপনার ওজন ক্মতে শুরু করেছে। ওজন কমাতে অবশ্যই আপনাকে খাবারের সাথে সালাদ আকারে খেতে হবে।

অন্যান্য খাবারের যে পুষ্টি উপাদান থাকে, তা বেশি ক্যালোরিযুক্ত খাবার। তাই উচ্চ ক্যালোরিযুক্ত খাবার খেলে অবশ্যই একটি শসা খাবেন। এছাড়া আপনি প্রত্যেক খাবারের পরে একটি করে শসা খেতে পারেন, তবে অবশ্যই মনে রাখবেন রাত্রিতে এটি বেশি পরিমাণে খাবেন না। রাত্রিতে খাওয়ার আগে খাবেন রাত্রিতে খাওয়ার পরে কখনোই খাবেন না।

খালি পেটে শসা খাওয়ার উপকারিতা

খালি পেটে শসা খাওয়ার উপকারিতা বেশ কয়েকটি লক্ষ্য করা যায়। সকালে খালি পেটে শসা খেলে পেট পরিষ্কার হয়। এটি শরীর থেকে ক্ষতিকর ও বিষাক্ত পদার্থ বের করতে সাহায্য করে। এছাড়া এতে ডায়েটারি ফাইবার থাকার কারণে হজম শক্তি বৃদ্ধি করে।

শসা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য একটি ভালো খাবার। প্রতিদিন নিয়মিত খালি পেটে শসা খেলে ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ থাকে। এটি লোক্যালোরি হওয়ায় এবং গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম হওয়ায় ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুবই উপকারী। গ্লাইসেমিক ইনটেক্স কম হওয়ায় রক্তের গ্লুকোজ মাত্রা বাড়ায় না।

এতে পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম থাকার কারণে উচ্চ রক্তচাপ রোগীদের জন্য খুবই ভালো। এটা নিয়মিত খেলে উচ্চ রক্তচাপ কমতে সাহায্য করে, এর পাশাপাশি এটা খেলে শরীরকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। তবে যারা লো ব্লাড প্রেসারে আছেন তারা সকালে খালি পেটে শসা খাবেন না, এটি শুধু উচ্চ রক্তচাপ রোগীদের জন্য প্রযোজ্য।

একটি করে শসা সকালে খালি পেটে খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে এবং এর পাশাপাশি শরীরকে কর্মক্ষম রাখতে সাহায্য করে। তাই প্রতিদিন নিয়ম মেনে একটি করে সকালে খালি পেটে শসা খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। তবে অবশ্যই আপনাকে নিজের শরীরের অবস্থা বুঝে খেতে হবে।

শসা খাওয়ার সঠিক সময়

শসা খাওয়ার জন্য সঠিক সময়টা আপনার জানা দরকার। কেননা সঠিক সময়ে সঠিকভাবে খেলে আপনার শরীরের জন্য এটা উপকার বয়ে নিয়ে আসবে। তা নাহলে আপনার শরীরে ক্ষতি হতে পারে। তাই চলুন শসা খাওয়ার সঠিক সময়টি জেনে নেই-

গ্রীষ্মকালে আপনি নিয়ম করে প্রতিদিন শসা খেতে পারেন। তবে অবশ্যই মনে রাখবেন খালি পেটে সব সময় খাবেন না। আর শসা রাত্রিতে না খাওয়াই উত্তম। কেননা এর মধ্যে থাকা কিউকারবিটাসন জন্য রাতে শসা খেলে পেটের ফোলা ভাব হতে পারে। তাই আমরা দিনের বেলা খাব এবং প্রতি সাজে খাওয়ার চেষ্টা করব।

আমরা সকালে খাওয়ার পরে এবং দুপুরে খাওয়ার পরে একটি করে শসা খেতে পারি। অথবা খাওয়ার সময় খাবারের সাথে সালাদ আকারে খেতে পারি। আর বিকেলে এমনিতেই একটি খেতে পারি। এ ধরনের সময়ে খেলে আপনার কোন ধরনের সমস্যা হবে না বলে আশা করা যায়। সব সময় চেষ্টা করবেন দিনের সময় খাওয়া এবং প্রত্যেক খাবারের পর বা খাবারের সাথে।

শসা খাওয়ার নিয়ম জেনে নিন

"কথায় আছে নিয়ম মেনে সবজি খান - সুস্থ জীবন পান।" তাই আপনার সুস্থ জীবনের জন্য অবশ্যই সবজিটি নিয়ম জেনে খেতে হবে। নিম্নে শসা খাওয়ার সঠিক নিয়ম-কানুন গুলো আপনাদের মাঝে তুলে ধরা হলো-

এতক্ষণ ধরে আপনি যদি ধারাবাহিকভাবে আর্টিকেলটি পড়ে আসেন তাহলে অবশ্যই জানতে পেরেছেন কারা কোন কোন সময় কিভাবে শসা খেতে পারবেন এবং তাদের কোন সময় খেলে তাদের জন্য উপকার হবে। তারপরেও আমি এ বিষয় সম্পর্কে নিম্নে আরো ভালোভাবে আপনাদের বোঝার জন্য তুলে ধরেছি।

যারা ডায়াবেটিস রোগী বা যারা উচ্চচাপ উচ্চ রক্তচাপ রোগী রয়েছেন তারা সকালে খালি পেটে খেতে পারেন আবার তারাই অন্যান্য সময় খাওয়ার পরে খেতে পারেন তবে তাদের জন্য সকালে খালি পেটে খাওয়া ভালো। এছাড়া যারা ওজন বা মেদ বা চর্বি কমাতে চান তারা অবশ্যই সকালে খালি পেটে খেতে পারেন।

যারা মেদ বা চর্বি কমাতে চান তাদেরকে একটি বিষয়ে মনে রাখতে হবে যেন আপনারা উচ্চ কোন ক্যালোরিযুক্ত খাবার একটু কম পরিমাণে খাবেন। তাহলে দেখবেন যে আপনার খুব দ্রুততার সাথে ওজন কমে যাচ্ছে। এছাড়া ওজন কমানোর জন্য শসার সাথে অলিভ অয়েল, তীষীর তেল আবার এর সাথে পালং শাক বা টমেটো অথবা চিজ যদি যুক্ত করেন, তাহলে দেখবেন খুব দ্রুততার সাথে ওজন কমছে।

আবার যারা নিম্ন রক্তচাপ বা যাদের রক্তচাপ ও ব্লাড সুগারের চাপ কম তারা সকালে খালি পেটে বা খাবারের পরে তাদের না খাওয়াই ভালো। নিম্ন রক্তচাপ বা যাদের ব্লাড সুগার চাপ কম তাদের জন্য এটি খাওয়া যাবে না। কেননা এটি লো ক্যালোরি হাওয়ায় শরীরকে আরো দুর্বল করে দিতে পারে। তাই যারা নিম্ন রক্তচাপের রোগী বা যাদের সুগার কম তারা এটি এড়িয়ে চলবেন।

যারা যারা কোন রোগে ভুগছেন না বা যাদের শরীর ভালো আছে তারা কিভাবে খাবেন, তারা এভাবে খাবেন প্রত্যেক খাবারের পর পর অর্থাৎ কোন খাবারের আগে খাবেন না, পরে খাবেন। আবার ডায়াবেটিস বা অন্যান্য উচ্চ রক্তচাপ রোগের জন্য সকালে খালি পেটে খাবেন না আপনারা সব সময় খাবেন নিয়ম মাফিক প্রত্যেক খাওয়ার পর বা খাবারের সাথে সালাদ আকারে।

ত্বকের জন্য শসার উপকারিতা

ত্বকের জন্য শসার উপকারিতা অনেক। এর মধ্যে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য উপকারিতা আপনাদের মাঝে তুলে ধরার চেষ্টা করবো। নিম্নে ত্বকের জন্য শসার যে সকল উপকারিতা রয়েছে সে সকল উপকারিতা গুলো বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হলো-

শসার রস ত্বকে টোনারের কাজ করে থাকে। শসার রসের সাথে মধু, লেবুর রস ও গোলাপজল মিশিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট মুখে রেখে, এরপর ধুয়ে ফেললে ত্বক খুব টানটান করবে ও কুঁচকানো ভাব দূর করবে। এছাড়া মুখের কালো দাগ দূর করতে কচি শসার রস অনেক ফলপ্রসু। কচি শসার রসের সাথে কয়েক ফোটা লেবুর রস মিশিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেললে মুখের কালো দাগ দূর হয়।

এটি ত্বকের তেলতেলে ভাব কমাতে সাহায্য করে এবং সেই সাথে ত্বকের ছিদ্র কমাতে সাহায্য করে। ব্রণ প্রতিরোধ করতে বা ব্রণ ভালো করতে শসার রস অনেক কার্যকরি। এটি ত্বকের প্রদাহ বা জ্বালাপোড়া কমাতে সাহায্য করে। এর রস মুখে মাখলে ত্বকের জ্বালাপোড়া কমতে সাহায্য করে।

এটি রোদে পোড়া দাগ দূর করতে বিশেষভাবে সাহায্য করে থাকে। এর রস ১৫ থেকে ২০ মিনিট ধরে মুখে রেখে দেওয়ার পরে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেললে ত্বক মসৃণ ও সুন্দর হয় এবং খুব সহজেই রোদে পোড়া দাগগুলো ভালো হয়ে যায়। প্রাকৃতিকভাবেই এই শসা মুখে বা ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে।

শসা সম্পর্কে সাধারণ কিছু প্রশ্ন ও উত্তর

শসা সম্পর্কে সাধারণ কিছু প্রশ্ন ও উত্তর এখন আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করব। এ বিষয়টা আমরা এজন্যই করি যেন আপনারা সহজে একটি বিষয় সম্পর্কে ক্লিয়ার হয়ে যেতে পারেন। তাই কিছু সাধারণ প্রশ্ন এবং এর কিছু সংক্ষিপ্ত উত্তর নিম্নে আপনাদের মাঝে এখন উপস্থাপন করা হলো-

প্রশ্নঃ শসা কোন ধরনের উদ্ভিদ?
উত্তরঃ- শসা লাউ প্রজাতির লতানো উদ্ভিদ। এটি মাচায় ও মাটিতে হয়।
প্রশ্নঃ শসার স্বাদ কেমন?
উত্তরঃ- শসাতে তেমন কোনো স্বাদ নেই। তবে এটি সালাদ আকারে ভালো লাগে। এটি হালকা মিষ্টি ও তিক্ত স্বাদের একটি সবজি।
প্রশ্নঃ শসা ও খিরা কি এক প্রকার সবজি?
উত্তরঃ- না এরা জাত ভাই। তবে শসার স্বাদ এক রকম আর খিরার স্বাদ আরেক রকম। খিরার চাইতে দেশি শসার স্বাদ ভালো।
প্রশ্নঃ শসা তে কোন ধরনের ভিটামিন বিদ্যমান?
উত্তরঃ- শসাতে ভিটামিন এ বি ও সি পাওয়া যায়।
প্রশ্নঃ শসার উল্লেখযোগ্য পুষ্টি উপাদান গুলো কি কি?
উত্তরঃ- শসার উল্লেখযোগ্য পুষ্টি উপাদান গুলো হলো- পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও মিনারেল। এছাড়া এতে আরও রয়েছে ডায়েটারি ফাইবার।
প্রশ্নঃ শসা কোন জটিল রোগটি ভালো করতে পারে?
উত্তরঃ- শসা কিডনিতে সৃষ্ট পাথর ভালো করতে পারে।
প্রশ্নঃ শসা কাদের জন্য খাওয়া ভালো?
উত্তরঃ যারা ওজন কমাতে চান তাদের জন্য খুব ভালো। তাছাড়া ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অনেক ভালো।
প্রশ্নঃ শসাতে থাকা পানি কি ধরণের?
উত্তরঃ- শসাতে থাকা পানি বিশুদ্ধ মিনারেল, যা মানুষকে কর্মক্ষম রাখতে সাহায্য করে। অর্থাৎ মানুষের কাজের ক্ষমতা বাড়ায়।

শসা গাছের ফোলা রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা

শসা গাছের ফোলা রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা এ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক। এর পাশাপাশি শসা গাছের অন্যান্য রোগ এবং তার প্রতিকার সম্পর্কে আমরা জেনে নেবো। চলুন একে একে সব কিছু জেনে নেই বিভিন্ন ধরনের প্রতিরোধ সম্পর্কে। নিম্নে শসা গাছের ফোলা রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে তুলে ধরা হলো-

মূলত যখন শসার ফোলা রোগ হয়, তখন দেখা যায় যে পাতা হলুদ বর্ণ ধারণ করছে। আসলে এই জিনিসটা কয়েকটি কারণে হয়ে থাকে এর মধ্যে একটি হলো বিভিন্ন ধরনের সারের অভাব, আর দ্বিতীয়টা হচ্ছে শসার ভাইরাসজনিত মোজাইক রোগ।

মূলত এধরনের রোগ হলে ক্ষেত থেকে আক্রান্ত গাছ তুলে ফেলতে হবে। সাধারণত জাপ পোকা ও সাদামাছি এ রোগের বাহক। তাই এদের দমনের জন্য বা নষ্ট করার জন্য ইমিডাক্লোরোপ্রিড গ্রুপের কীটনাশক যেমন- এডমায়ার ১ মিঃলিঃ এক লিটার পানির সাথে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।

যেভাবে সার প্রয়োগ করবেন প্রথমে ফসল বোনার একমাস আগে বা ১৫ দিন আগে প্রতি হেক্টর জমিতে তিনটন চুন প্রয়োগ করতে হবে এবং মাটির অম্লত্ব ক্ষারত্ব মাত্রা ৭.২ এবং ৭.৪ নিয়ে যেতে হবে। এরপর জমিতে ১.৫ টন হারে নিমখোল ও মহুয়া খোল ১.১ অনুপাতে প্রয়োগ করতে হবে।

সবচাইতে ভালো হয় এর সাথে জৈব সার প্রয়োগ করলে। সেই সাথে রাসায়নিক সারগুলোকে একসাথে চার কেজি হেক্টর প্রতি প্রয়োগ করতে হবে। রাসায়নিক সার যেমন জিংক, সালফেট, বোরন, ইউরিয়া।

শেষ মন্তব্য

পরিশেষে একটি কথা শুধু বলতে চায় যে শসার নানা উপকারিতা রয়ছে। তবে এটা সঠিক নিয়ম মেনে খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ভালো। আপনি যদি পুরো আর্টিকেলটি পড়ে থাকেন তাহলে শসা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন বলে আশা করি।

তাছাড়া আরও কিছু জানতে হলে অবশ্যই আমার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। লেখার মধ্যে কোনো ভুল-ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আর নতুন নতুন তথ্য পেতে এই পেইজটি ফলো দিয়ে রাখবেন, যেন আপনি আমার নতুন তথ্যের নোটিফিকেশন পান।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

জিনেউস আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url