পার্থেনিয়াম গাছের ক্ষতিকর দিক - এর ভয়াবহ ক্ষতি থেকে যেভাবে বাঁচবেন
পার্থেনিয়াম গাছের ক্ষতিকর দিক ও এর ভয়াবহ ক্ষতি থেকে যেভাবে বাচবেন সে সম্পর্কে এই আর্টিকেল আপনাদের মাঝে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। এটি একটি মারাত্মক উদ্ভিদ যা আমাদের বড় ধরনের ক্ষতি করে থাকে। এ সম্পর্কে আমরা বিস্তারিত জানবো।

পেজ সূচিপত্রঃ পার্থেনিয়াম গাছের ক্ষতিকর দিক - এর ভয়াবহ ক্ষতি থেকে যেভাবে বাঁচবেন
- পার্থেনিয়াম গাছের ক্ষতিকর দিক
- পার্থেনিয়াম শব্দের অর্থ কি
- পার্থেনিয়াম এর স্থানীয় নাম
- পার্থেনিয়াম গাছের বৈশিষ্ট্য
- পার্থেনিয়াম গাছের বাসস্থান
- পার্থেনিয়াম গাছের ছবি
- পার্থেনিয়াম এর প্রাকৃতিক শত্রু কি
- পার্থেনিয়ামে কোন বিষ থাকে
- পার্থেনিয়াম উদ্ভিদের জৈব দূষক কি
- পার্থেনিয়াম গাছ মারার উপায়
- কীটনাশক ছাড়াও যে ভাবে পার্থেনিয়াম গাছ মারবেন
- পার্থেনিয়াম গাছ নষ্ট করার সঠিক নিয়ম
- পরিশেষে আমার মতামত
পার্থেনিয়াম গাছের ক্ষতিকর দিক
প্রথমে চলুন জেনে নেওয়া যাক পার্থেনিয়াম গাছের ক্ষতিকর দিক। এ গাছ বিভিন্নভাবে ক্ষতি করে থাকে এ গাছের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলায় বুদ্ধিমানের কাজ। পার্থেনিয়াম গাছের অন্যতম ক্ষতির দিক থেকে রয়েছে মানুষ ও গবাদি পশু সেই সাথে আবাদি জমি।
পার্থেনিয়াম গাছটি মানুষের একটি ভয়াবহ ক্ষতি করে থাকে। আমরা যারা এলার্জিই ভুগি তাদের ক্ষেত্রে এ গাছটি আরো বিপদজনক। কোন মতে যদি এই পাতার রস বা ফুলের রস যদি ওই ব্যক্তির লাগে যাদের এলার্জি আছে সেখান থেকে ক্যান্সার হওয়া সম্ভাবনা বেশি।
আবার গবাদি পশু যেমন মহিষ, ঘোড়া, গাধা, ভেড়া, ছাগল, গরু এসকল গবাদি পশু গুলো যদি এই গাছ খেয়ে থাকে, তাহলে তাদের যকৃতে পচন, মুখে ঘা, পৌষ্টিকতন্ত্রের ঘা প্রভৃতি রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। তাই এই গাছ থেকে আমাদের সচেতন থাকতে হবে অর্থাৎ এ গাছ কি কি ধরনের ক্ষতি করতে পারে সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হবে।
এ গাছ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে আপনাকে অবশ্যই নিচের বিষয়গুলো ধারাবাহিকভাবে পড়তে হবে। আপনি যদি এ বিষয়গুলো ধারাবাহিকভাবে পড়েন তাহলে বিস্তারিত সবকিছু জানতে পারবেন। এ গাছ কি কি ক্ষতি করে এবং মানুষের কি কি ক্ষতি করে এর পাশাপাশি গবাদি পশুর এবং আমাদের জমির যে সকল ক্ষতি করে তা সবকিছু আপনি জানতে পারবেন।
এর পাশাপাশি আরো কিছু জানতে পারবেন সেটা হচ্ছে ভয়াবহ ক্ষতিতে কিভাবে বাঁচবেন অর্থাৎ এটা নষ্ট করার উপায়। এটা সঠিক নিয়মে কিভাবে মেরে ফেলা যায় সে সম্পর্কে আপনারা বিস্তারিত জানতে পারবেন। আশা করি আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে ধারাবাহিকভাবে পড়বেন।
পার্থেনিয়াম শব্দের অর্থ কি
পার্থেনিয়াম শব্দের অর্থ কি চলুন এ বিষয় সম্পর্কে "পার্থেনিয়াম গাছের ক্ষতিকর দিক "এই আর্টিকেল থেকে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক। মূলত পার্থেনিয়াম শব্দের প্রাচীন একটি নাম রয়েছে। তবে এক এক সময় এটির এক এক ধরনের নামের প্রচলন দেখা যায়। নিম্নে পার্থেনিয়াম শব্দের অর্থ গুলো আলোচনা করা হলো-
পার্থেনিয়াম নামটি প্রাচীন গ্রিক নাম পার্থেনিয়ন থেকে বিবর্তন হয়ে ট্যানাসেটাম পার্থেনিয়ামকে নির্দেশ করে থাকে। এটি সম্ভবত গ্রিক শব্দ পার্থেনস থেকে এসেছে, যার অর্থ- কুমারী। কুমারী নামটি উদ্ভিদের একটি প্রাচীন নাম। এটির অন্য নাম কংগ্রেস ঘাস, গাজর ঘাস, হোয়াইট টপ প্রভৃতি নামে ডাকা হয়।
পার্থেনিয়াম আরেকটি গ্রিক নামের অর্থ বহন করে, যার অর্থ- ভার্জিন। এটি একটি ট্রপিক্যাল জাতীয় উদ্ভিদ। পার্থেনিয়াম সূর্যমুখী উপজাতির একটি উদ্ভিদ। উদ্ভিদটি আমেরিকার গুল্ম প্রজাতির এটা অবশ্য উত্তর আমেরিকার ডেজি পরিবারের সূর্যমুখী উপজাতির গুল্ম প্রজাতির বংশ।
পার্থেনিয়াম এর স্থানীয় নাম
"পার্থেনিয়াম গাছের ক্ষতিকর দিক" এই আর্টিকেল থেকে চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক পার্থেনিয়াম এর স্থানীয় নাম। এর বেশ কিছু বা বেশ কয়েকটি স্থানীয় নাম রয়েছে হয়তো বা আপনি শুনেছেন বা আপনি শুনে না থাকতেও পারেন। তো চলুন আপনার জানার জন্য বেশ কয়েকটি নাম নিম্নে বর্ণনা করা হলো-
আমাদের দেশে বেশ অঞ্চলে দেখা যায় যে এর নাম জানেনা। তবে এর সাধারন কয়েকটি নাম রয়েছে। বিভিন্ন অঞ্চলে এর নাম গুলো মানুষ সঠিকভাবে জানে না। এটা সাধারণত এক ধরনের আগাছা নামে মানুষের কাছে পরিচিত। তবে সঠিক নাম সম্পর্কে অনেকের ধারণা নেই।
পার্থেনিয়াম এর বৈজ্ঞানিক নাম- (Parthenium Hysterophorus)। পার্থেনিয়াম এর সাধারণ কিছু নাম হচ্ছে- তিক্ত আগাছা, তিক্ত উইড, গাজর ঘাস, কংগ্রেস ঘাস, তিক্ত ঝাড়ু, মিথ্যা র্যাগউইড, মিথ্যা ক্যামোমাইল, ফিভারফিউ, শান্তা মারিয়া, সাদাটপ, হোয়াইটহেড ও হোয়াইটস্টোপ।
পার্থেনিয়াম গাছের বৈশিষ্ট্য
পার্থেনিয়াম গাছের বৈশিষ্ট্য গুলো চলুন এবার বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক। আসলে কিভাবে চিনবেন বা এই গাছের কোন কোন দিক রয়েছে কি কি বৈশিষ্ট্য রয়েছে সে বিষয়গুলো "পার্থেনিয়াম গাছের ক্ষতিকর দিক" এই আর্টিকেল থেকে চলুন বিস্তারিত জেনে নেই। নিম্নে পার্থেনিয়াম গাছের কিছু বৈশিষ্ট্য আপনাদের মাঝে তুলে ধরা হলো-
পার্থেনিয়াম মূলত আগাছা জনক উদ্ভিদ। এর পাতা মোটা কিন্তু সরু আকারের খাছ কাটা থাকে। পাতা দেখতে হালকা সবুজ রং এর থেকে গাড়ু সবুজ রঙের হয়ে থাকে। এর ফুল সাদা রংয়ের হয়। এ গাছটি যেকোনো প্রতিকূল পরিবেশে টিকে থাকতে পারে।
এই আগাছা জনিত উদ্ভিদটি উচ্চতা প্রায় দুই থেকে তিন ফুট হয়। এর আয়ুষ্কাল ৩ থেকে ৪ মাস হয়ে থাকে। এই তিন থেকে চার মাসের মধ্যে একটি গাছ ৪ থেকে ৫ হাজার গাছের জন্ম দিতে পারে। এর পাতা চিকন এবং এর অসংখ্য শাখা থাকে। এর পাতা দেখতে কিছুটা ত্রিভুজের মতো লাগে।
ফুলগুলো অবশ্যই সাদা ছোট ছোট হয়। এ গাছটি নরম কাণ্ডবিশিষ্ট, শিরাযুক্ত, একবর্ষজীবি উদ্ভিদ। এই গুল্মজাতীয় উদ্ভিদটির ফুলে এক ধরনের বিষ থাকে, যার কারণে এই গাছটি অনেক ক্ষতিকর। আমরা পরে এ বিষয় সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানবো।
পার্থেনিয়াম গাছের বাসস্থান
এবার চলুন জেনে নেওয়া যাক পার্থেনিয়াম গাছের বাসস্থান সম্পর্কে। এই পার্থেনিয়াম গাছ সাইলেন্ট কিলার হিসেবে পরিচিত। এর সংস্পর্শে এলে মানুষের এবং গবাদি পশুর বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি হয়ে থাকে। চলুন এ গাছের বাসস্থান সম্পর্কে জেনে নেই।
পার্থেনিয়াম গাছ সাধারণত বাড়ির আঙিনায়, রাস্তার দুই পাশে, ও জমির আইলে এমন কি জমির ভেতরে হয়ে থাকে। তবে বর্তমানে রাস্তায় দুই ধারে এই পার্থেনিয়াম গাছটি বেশি লক্ষ্য করা যায়। এছাড়া পরিত্যক্ত কোন আমবাগান, লিচুবাগান, বা অন্যান্য বাগানে এ গাছটি দেখা যায়। এই গাছটি বসন্ত ও গ্রীষ্ম বেশি বৃদ্ধি পায়, এপ্রিল ও নভেম্বর মধ্যে এর বৃদ্ধি লক্ষ্য করা যায় বেশি।
মানুষ এখনো তেমন ভাবে এই গাছটি সম্পর্কে সচেতন নয়। অনেকেই এই গাছটির ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে জানিনা। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে এই গাছটি রাস্তার দুই পাশে জমির আইলের দুই পাশে এমনকি জমির ভিতরে দেখা যায়। এ বিষয়ে কৃষকরা তেমন কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনা।
পার্থেনিয়াম গাছের ছবি
পার্থেনিয়াম গাছের ছবি দেখি আপনারা চিনতে পারবেন খুব সহজেই। আপনারা হয়তো অনেকে এই গাছ চিনেন না, যার কারণে এ গাছ সম্পর্কে সচেতন থাকছেন না। তাই আপনাদের সচেতনতার জন্য এ গাছের কিছু ছবি আপনাদের মাঝে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি বিস্তারিতভাবে। নিম্নে কয়েকটি পার্থেনিয়াম গাছের ছবি দেওয়া হলো-
পার্থেনিয়াম এর প্রাকৃতিক শত্রু কি
পার্থেনিয়াম এর প্রাকৃতিক শত্রু কি চলুন এবার এ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক। এক ধরনের বিষাক্ত আগাছা যা পরিবেশ থেকে মানুষ ও গবাদি পশু বা প্রাণীদের নানান ক্ষতি করে থাকে এমনকি ফসলি জমিরও ক্ষতি করে থাকে।
পার্থেনিয়াম প্রকৃতির একটি শত্রু। কেননা এটি প্রকৃতির বিভিন্ন প্রাণিকূল, মানুষ, গবাদি পশু এবং অন্যান্য উদ্ভিদের বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি করে থাকে। এই উদ্ভিদটি ক্ষতির দিক থেকে ফসলই ক্ষতির দিক থেকে এবং প্রাণী ক্ষতির দিক থেকে অন্যতম। এটি ফসলের প্রায় ৪০ শতাংশ উৎপাদন কমিয়ে দেয়।
এর ফুলের রেনু থেকে মানুষের বিভিন্ন ধরনের রোগ হতে পারে। মানুষের হাঁপানি, এলার্জি, চর্মরোগ হয়ে থাকে। ফসলের ক্ষেত্রে এর রেণু বাতাসের সাথে মিশে টমেটো, মরিচ ও বেগুনের ফুল ঝরিয়ে দেয়। এর আগাছা গরু-ছাগল খেলে গরু ছাগলের চর্মরোগ ও যকৃতে সমস্যা হয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন মূলত শ্বাসকষ্টের জন্য দায়ী পার্থেনিয়াম ফুলের পরাগরেণু। এই পরাগ রেনু বাতাসে ভেসে বেড়ায়। শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে এই ফুলের রেনু শরীরে ঢুকলে হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট, ব্রংকাইটিসের মতন রোগ হয়।
পার্থেনিয়ামে কোন বিষ থাকে
পার্থেনিয়ামে কোন বিষ থাকে চলুন এ বিষয়ে জেনে নেয়া যাক। পার্থেনিয়াম এর মূল উৎপত্তিস্থল মেক্সিকোতে। এই গাছটি বিষে ভরপুর একটি গাছ। এ গাছের পাতা ও ফুলের রেনুতে মারাত্মক বিষ থাকে যা প্রাণীজগতের জন্য খুবই মারাত্মক। নিম্নে পার্থেনিয়াম গাছে কোন ধরনের বিষ থাকে তা উল্লেখ করা হলো-
পার্থেনিয়ামের এ গাছটি বাংলাদেশে ২০০৮ সালে প্রথম শনাক্ত করা হয়। পশ্চিমবঙ্গে এই আগাছাটি ১৯৭৫ সালে প্রথম দেখা যায়। পার্থেনিয়াম গাছটি সম্পূর্ণ বিষে ভরপুর, তবে এর ফুলের রেনুতে Sesquiter-pene Lactone SQL জাতীয় বিষাক্ত পদার্থ থাকে। এছাড়া এর মধ্যে থাকে বিষাক্ত রাসায়নিক যেমন- ক্যাফেইক এসিড, পিঅ্যানিসিক এসিড প্রভৃতি।
পার্থেনিয়াম পাতার রসে টক্সিন থাকে। এই টক্সিন টি খুব ক্ষতিকর। এটি প্রাণী, মানবদেহ এবং ফসলি জমির জন্য খুব ক্ষতিকর। এই টক্সিনটি বিভিন্ন ধরনের চর্মরোগ, শ্বাসকষ্ট, ত্বকের চুলকানি এমনকি ত্বকের ক্যান্সার পরিমাণ পর্যন্ত হয়ে থাকে।
প্রাণীদের ক্ষেত্রে ভেতরে চর্মরোগ, যকৃতে সমস্যা, মুখে ঘা এবং আরও বেশ কিছু সমস্যা হয়। এটি ফসলি জমির ভেতর আখ, ধান, টমেটো, বেগুন, মরিচ এ ধরনের ফসলি জমি প্রায় ৪০% উৎপাদন কমিয়ে দেয়।
পার্থেনিয়াম উদ্ভিদের জৈব দূষক কি
পার্থেনিয়াম উদ্ভিদের জৈব দূষক কি চলুন এ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। আমরা এতক্ষণ ধরে জানলাম যে পার্থেনিয়াম আসলে একটি মারাত্মক উদ্ভিদ তবে শুধু পাচীন আমেরিকার জাজিকেরা মানুষগুলো এক ধরনের রোগের চিকিৎসা করত তাছাড়া এটি মারাত্মক বিষধর উদ্ভিদ।
পার্থেনিয়াম হচ্ছে একটি অ্যালিলোপ্যাথিক উদ্ভিদ। এ জাতীয় উদ্ভিদ বৃদ্ধি প্রতিরোধই রাসায়নিক উৎপন্ন করে যা তাদের আশেপাশের অন্যান্য যেকোনো উদ্ভিদের বৃদ্ধিতে ইতিবাচক বা নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। আক্রমণাত্মক প্রজাতির নেতিবাচক অ্যালিলোপ্যাথিক প্রভাব থাকে যার ফলে স্থানীয় ও উদ্ভিদের বৃদ্ধি বন্ধ হয়ে যায়।
এই উদ্ভিদ রাসায়নিক নির্গত করে, তার দ্বারা নিচের যে ফসলি জমি বা ঘাস উৎপাদন নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এটা যে জায়গায় হয় আশেপাশে সমস্ত জায়গা জুরে হয়। এ জাতীয় অ্যালিলোপ্যাথিক রাসায়নিক গুলোর মধ্যে রয়েছে (Fanilic) এসিড ডেরিভেটিভ এবং শেসকুইটারপিন ল্যাকটোন।
এ ধরনের রাসায়নিক নির্গত হওয়ার কারণে অন্যান্য উদ্ভিদের বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। প্রধান বিষাক্ত রাসায়নিক পার্থেনিয়াম হিস্টোরোফরাসে পাওয়া যায়। ( IUPAC ) নাম= হাইড্রক্সি-৬ বিটা, অ্যাপক্সিআমব্রোশা-২ ১১(১৩), ডায়েন-৪।
পার্থেনিয়াম গাছ মারার উপায়
পার্থেনিয়াম গাছ মারার সহজ কিছু উপায় রয়েছে তা আমরা এখন "পার্থেনিয়াম গাছের ক্ষতিকর দিক"।এই আর্টিকেল থেকে জানবো। এর মধ্যে আপনি কীটনাশক প্রয়োগ করে এই পার্থেনিয়াম আগাছাটি খুব সহজে মারতে পারবেন। নিম্নে প্রার্থী নিয়ম গাছ মারার একটি কীটনাশকের নাম তুলে ধরা হলো-
পার্থেনিয়াম এ মারাত্মক আগাছাটি মারতে হলে আপনাকে আগাছা নাশক মেট্রিবুজিন প্রয়োগ করতে হবে। অবশ্যই এটি হেক্টর প্রতি এক থেকে দেড় কেজি হারে দিতে হবে। মনে রাখতে হবে এ আগাছা নাশক যখন প্রয়োগ করবেন তখন মুখ ঢেকে রাখবেন এবং সেই সাথে ফুল শার্ট ও ফুল প্যান্ট পরে আগাছাতে কীটনাশকটি প্রয়োগ করতে যাবেন।
এছাড়া আপনি আরেকটি কাজ করতে পারেন এ মারাত্মক পার্থেনিয়াম গাছটি মারার জন্য। উপায়টি হচ্ছে খাদ্য লবনের প্রায় ১৫% দ্রবণে এক লিটার পানিতে ১৫০ গ্রাম লবণ আগাছের উপর ছিটিয়ে দিলে শুকিয়ে যাবে, এরপরে আপনি শুকনো গাছটি আগুন দিয়ে ধ্বংস করে দিবেন। এভাবে আপনি খুব সহজে এই গাছটি মারতে পারবেন বা ধ্বংস করতে পারবেন।
কীটনাশক ছাড়াও যে ভাবে পার্থেনিয়াম গাছ মারবেন
কীটনাশক ছাড়াও যে ভাবে পার্থেনিয়াম গাছ মারবেন চলুন এ বিষয়ে সম্পর্কে একটু বিস্তারিত জেনে নেই। কীটনাশক ছাড়াও এই ভয়ংকর পার্থেনিয়াম আগাছাটি ধ্বংস করা যায়। কিভাবে ধ্বংস করবেন চলুন নিম্নে এ বিষয় সম্পর্কে জেনে নেই।
পার্থেনিয়াম গাছটির ভয়াবহ ক্ষতি থেকে যেভাবে বাঁচবেন তার অন্যতম উপায় হচ্ছে এই ঘাসটি উঠিয়ে ফেলা অর্থাৎ যে স্থানে হবে সেই স্থানে আপনাকে প্রথমেই আগাছা পরিষ্কার মানুষ দিয়ে এ কাজটি করতে হবে। আপনার জমিতে যদি হয় তাহলে একবার শিকড় সহ উপরে দিলে খুব সহজেই সেখানে আর জন্মানোর সম্ভাবনা নেই।
এরপরে আপনি আরেকটি কাজ করতে পারেন সেটি হচ্ছে সেই আগাছাটি নিড়ানীর সময় বা তোলার সময় বা তোলার পরে জমিতে লক্ষ্য রাখতে হবে যেন কোন ধরনের ছোট বীজ আছে কিনা ছোট যদি চারা গাছ থাকে তাহলে অবশ্যই সেটাকে লবণ দিয়ে ধ্বংস করতে হবে। পারতপক্ষে সেটা তুলে ফেলা অনেক ভালো।
আরেকটি বিষয় হচ্ছে এই গাছটি আপনার উপরে তোলার সময় অবশ্যই আপনাকে সংস্পর্শে এড়িয়ে চলতে হবে। এরপরে যখন উপড়ানো হয়ে যাবে তারপর তা শুকিয়ে গেলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলবেন। কেননা আগুন দিয়ে যদি পুড়িয়ে ফেলেন তাহলে খুব সহজেই তার বংশবিস্তারটা লাভ করবে না। অর্থাৎ তার বীজটা ধ্বংস হয়ে যাবে, সে কারণে এটা পুড়িয়ে ফেলা অনেক ভালো।
এই গাছটি মারার সর্বোত্তম উপায় হচ্ছে লবণ পানি মিশ্রণ। লবণ পানি মিশ্রণ করে যদি গাছের উপর স্প্রে করা যায় তাহলে গাছ কিছুদিনের ভিতরে আপনার শুকিয়ে যাবে। এই শুকানো গাছটি আপনার পুড়িয়ে ফেলতে হবে। অবশ্যই পুড়ানোর পর লক্ষ্য রাখতে হবে যেন কোন মতে কোন বীজ না থাকে বা ছোট চারা না থাকে।
পার্থেনিয়াম গাছ নষ্ট করার সঠিক নিয়ম
পার্থেনিয়াম গাছ নষ্ট করার সঠিক নিয়ম চলুন জেনে নেই। এর ভয়াবহ ক্ষতি থেকে বাঁচতে অবশ্যই সঠিক নিয়মে এটা নষ্ট করতে হবে। তা নাহলে পরবর্তীবার আপনি আবার এর সমস্যার সম্মুখীন হবেন। তাই আপনাদের জন্য আমি এর সঠিক নিয়মটি তুলে ধরেছি যেন আপনারা একবারে এ গাছটি ধ্বংস করতে পারেন।
এই মারাত্মক গাছটি ধ্বংস করতে বা নষ্ট করতে কোন সময়টি প্রয়োজন! আসলে সেই সময়টা হচ্ছে দুপুর। এই দুপুরের সময় অর্থাৎ ১১ টা থেকে ৩ টার মধ্যে আপনি যদি কীটনাশক প্রয়োগ করেন তাহলে খুব তাড়াতাড়ি এটা শুকিয়ে যাবে বা মরে যাবে এবং মরার পরে এটা আগুন দিয়ে পোড়ালে খুব সহজেই সেখান থেকে আর এ গাছ জন্মাবে না।
তাহলে এ থেকে বোঝা যাচ্ছে যে পার্থেনিয়াম গাছ নষ্ট করার সঠিক নিয়ম বা সঠিক সময়টি হচ্ছে দুপুরের সময়। আবার যদি লবণ পানি মিশ্রণ করে ১১ টা থেকে ১২ টার মধ্যে প্রয়োগ করেন তাহলে দেখা যাবে সন্ধ্যা লাগতে লাগতে শুকিয়ে যাবে। পরের দিন এই শুকানো গাছটি খুব সহজে আগুন লাগিয়ে এর বংশবিস্তার নষ্ট করা যায় খুব সহজে।
পরিশেষে আমার মতামত
উপরের সকল আলোচনা থেকে পরিশেষে আমি শুধু আপনাদের মাঝে একটি কথা বলতে চাই যে এই মারাত্মক গাছটি অবশ্যই আপনি এর সংস্পর্শ থেকে এড়িয়ে চলবেন এবং সেই সাথে এটি ধ্বংস করার জন্য উপরে বর্ণিত সকল উপায়গুলো মনোযোগ সহকারে কাজ করবেন।
আমি আশা করছি যে এই বিষয়টা আপনাদের অনেক উপকার বয়ে নিয়ে আসবে। আমি চেষ্টা করেছি যতদূর সম্ভব এটা ধ্বংস করার ব্যাপারে এবং এর ক্ষতিকর দিকগুলো আলোচনা করতে। আমার এই তথ্যগুলো যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আমাকে ফলো দিয়ে পাশে থাকবেন এবং সুন্দর একটি মতামত দিয়ে যাবেন।
জিনেউস আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url